বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতি সিলেট মহানগরীর ডাকে গতকাল শুক্রবার সিলেট শহর ও শহরতলীর প্রায় সকল মসজিদে একই খুতবা প্রদান করেন মসজিদের সম্মানীত ইমাম ও খতিবগণ।
সাম্প্রতিক ঘটে যাওয়া এম.সি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণ ঘটনায় যখন দলমত নির্বিশেষে সবাই মাঠে নিন্দা ও প্রতিবাদ করছেন ইমাম সমিতি সিলেট মহানগর নগরীর প্রায় ৩ শতাধিক মসজিদে গুরুত্বসহকালে এ বিষয়টি প্রতিবাদের সুরে খুতবার বয়ানে বলেছেন সম্মানিত ইমাম-খতিবগণ।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ইমাম সমিতির মধুবনস্থ কার্যালয়ে নগরীর বিজ্ঞ উলামায়ে কেরামকে আহ্বান করে এক পরামর্শ সভার আহ্বান করেন ইমাম সমিতির দায়িত্বশীলগণ।
মহানগর সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাবের সভাপতিত্বে নগরীর ইমাম-খতিবগণ যৌন হয়রানী, ব্যাভিচার বিস্তারের কারণ ও প্রতিকার বিষয়ে একটি বাংলা খুতবা প্রণয়নের জন্য পরামর্শ দেন। বৈঠক থেকে ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি খুতবা তৈরি করেন। প্রণয়নকৃত খুতবাতে যৌন হয়রানী ও ব্যভিচার বিস্তারের ১০টি কারণ চিহ্নিত করা হয়। ঐ কারণগুলোর সাথে কোরআন সুন্নাহ দলিলাদি সংযুক্ত করে একটি বুকলেটও ছাপানো হয়। নগরীর সকল মসজিদের ইমাম ও খতিবগণ প্রণয়নকৃত খুবতার কপি হাতে শুক্রবার খুতবা দেওয়ায় সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে সাড়া পড়ে যায়। সিলেট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, দরগাহে হযরত শাহজালাল (রহ.) মসজিদ, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় জামে মসজিদ, কালেক্টরেট জামে মসজিদ, হাজী কুরদত উল্লাহ জামে মসজিদ, শাহ আবু তুরাব জামে মসজিদ, জজ কোর্ট জামে মসজিদ, তালতলা জামে মসজিদ, নাইরপুল জামে মসজিদ, শিবগঞ্জ বাজার জামে মসজিদ, টিলাগড় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, আম্বরখানা জামে মসজিদ, কুমারপাড়া জামে মসজিদ, নয়াসড়ক জামে মসজিদ, রিকাবীবাজার জামে মসজিদ, আল মদিনা (মদিনা মার্কেট) জামে মসজিদ, আখালিয়া নবাবী জামে মসজিদ, শেখঘাট জামে মসজিদ, খোজারখলা মারকাজ জামে মসজিদ, ভার্থখলা জামে মসজিদ, কদমতলী জামে মসজিদ, কাজলশাহ জামে মসজিদ ও সুবিদবাজার জামে মসজিদ সহ নগরীর সবকটি মসজিদের খতিবগণ এম.সি কলেজ ছাত্রাবাসে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
খতিবগণ বলেন, আধ্যাত্মিক রাজধানী খ্যাত সিলেটে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা কল্পনাতিত। খতিবগণ খুতবার বিষয়ে যৌন হয়রানী ও ব্যভিচার বিস্তারে যেসব কারণ চিহ্নিত করেন তন্মোধ্যে অশ্লীল ছায়াছবি, কমেডি অশ্লীলতা, অশ্লীল বিজ্ঞাপন, সহশিক্ষা-সহকর্ম, স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের অপব্যবহার, মোবাইল চ্যাটিং, মাদকের ছড়াছড়ি, পর্ণোগ্রাফির প্রসার, নারী-পুরুষের অবাধ চলাফেরা, পর্দাহীনতা ও অপরাধীদের পক্ষপাতমূলক আচরণ চিহ্নিত করে বক্তব্য প্রদান করেন।
খতিবগণ অভিভাবক ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, প্রতিটি ঘরে ধর্মীয় শিক্ষা-দীক্ষা নিশ্চিত করণ, ছেলে-মেয়েদের বন্ধু নির্বাচনে সতর্কতা, পাঠ্যপুস্তকে দ্বীনিশিক্ষা বাধ্যতামূলক, ছেলেমেয়েদের যথা বয়সে বিয়ের ব্যবস্থা করা, যৌন আবেদনময়ী পোষাক পরিহার, যৌন হয়রানী, যিনা-ব্যভিচার ও ধর্ষণের শাস্তি নিশ্চিত করুন ও প্রত্যেক পাঠ্যপুস্তকে নবী জীবনের অধ্যায় সংযোজন করতে জোর দাবী জানান। বিজ্ঞপ্তি