অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসাটির বিপুল বিস্তার ঘটেছিল বিএনপি-জামায়াত আমলে। দলটি তখন ক্ষমতাসীন। মূলত যুবদলই এই অবৈধ সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটিয়েছিল। পরবর্তীকালে ক্ষমতার পালাবদল ঘটলেও দেখা গেছে ক্ষমতাসীনদের নীতিহীন অংশের পৃষ্ঠপোষকতায় ক্যাসিনো ব্যবসা অব্যাহত থেকেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সর্বপ্রথম নির্দেশ দিলেন এই অনাচার চলবে না, শুদ্ধি অভিযান শুরু করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, এ দেশে ক্যাসিনো আইনসঙ্গত ব্যবসা নয়। আইনের বাইরে কোন ব্যবসা আমরা কাউকে করতে দেব না। সক্রিয় অভিযানে অল্পকালের ভেতর ক্যাসিনো ব্যবসা গুটিয়ে গেলে মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিল। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দেশে অবাধে জুয়ার মতো অনাচার চলবে না, এমন ভরসাই মিলেছিল। কিন্তু ওই শুদ্ধি অভিযানের বছরপূর্তিকালে খোঁজখবর নিতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে থলের বিড়াল। করোনাকালে মানুষ যখন জীবনমৃত্যু নিয়ে শঙ্কিত সে সময়েও বসে নেই জুয়াড়িরা। তারা অনলাইনে ক্যাসিনোর আসর বসিয়েছে। আগে বড় বড় স্পোর্টিং ক্লাবে কিংবা যুবলীগের নীতিহীন কিছু নেতার ভাড়া করা ভবনে ক্যাসিনোর আসর বসত। এখন মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাটবাড়িতে চলছে রমরমা ক্যাসিনো ব্যবসা। তাহলে সমাজ আর কিভাবে শুদ্ধ হলো!
ক্যাসিনো অভিযানের ঘটনায় দায়ের করা মামলাগুলোর মধ্যে অবশ্য ১৩টি মামলার চার্জশীট দেয়া হয়েছে। একটি মামলার তদন্ত চলছে। শিগগির চার্জশীট দেয়া হবে। প্রায় তিন মাস ধরে শুদ্ধি অভিযান চালিয়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন ক্লাব সিলগালা করে দেয়া হয়। যদিও এসব ঘটনায় ‘জুয়া খেলার’ অপরাধে একটি মামলাও হয়নি। সব মামলা হয়েছে মাদক, মানি লন্ডারিং ও অস্ত্র আইনে। জুয়া খেলা বন্ধে প্রচলিত আইনটি ১৫০ বছরের বেশি পুরনো। ওই আইনে ‘ক্যাসিনো’ বলে কোন শব্দই নেই। এ কারণে আইনটির কোন কার্যকারিতাও নেই। তাই যুগোপযোগী আইন প্রণয়নও জরুরী হয়ে উঠেছে।