বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
টানা তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে সীমান্ত নদী যাদুকাটায় পাহাড়ি ঢল। ঢলের পানিতে নিমজ্জিত তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়কের একাধিক স্থান। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বন্ধ হয়ে পড়েছে তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ। ভোগান্তিতে পথে যতায়াতকারী যাত্রী সাধারণ।
তাহিরপুর থেকে সুনামগঞ্জ জেলা সদরের দূরত্ব ৩২ কিলোমিটার। ৩২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা শক্তিয়ার খলা ও দুর্গাপুর নামক স্থান দু’টিতে প্রায় ৩’শ মিটার সক অপেক্ষাকৃত নিচু। অপরদিকে তাহিরপুর উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজার পূর্ব দিকে ব্রীজের এপ্রোচে ১’শ মিটার সড়ক অপেক্ষাকৃত নিচু করা হয়েছে। সড়ক নিচু থাকায় সামান্য বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে যাদুকাটায় সামান্য পানি বৃদ্ধি পেলেই সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। আর পানি প্রবাহিত হলেই দু’চার দিনের জন্য বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তাহিরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক যোগাযোগ। মে থেকে সেপ্টেম্বর এ পাচ মাসে কমপক্ষে ৩০/৪০ দিন সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকে।
স্থানীয় প্রকৌশল অফিস জানায়, স্থানগুলো দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার জন্য একটু নিচু রাখা হয়েছে। তবে স্থানীয়রা জানায়, সড়কে অপেক্ষাকৃত নিচু স্থান গুলোতে একাধিক কালভার্ট বা দু’একটি ব্রীজ নির্মাণ করে এর স্থায়ী সমাধান করা যেতে পারে। তাদের অভিযোগ ইচ্ছে করেই এলজিইডি সড়কের এ ডিজাইন করছে না।
সরজমিনে এ সড়েক দুর্গাপুর নামক স্থানে দেখা যায় সড়কের দু’পাশে সড়ক থেকে উঁচু করে অনেক বাড়িঘর নির্মাণ করা হয়েছে। উঁচু করে ঘর বাড়ি নির্মাণ করার কারণে এ নিচু সড়কে আর তেমন একটা পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। অপরদিকে আনোয়ারপুর ব্রীজের পূর্ব পাশে এপ্রোচ সড়কটি দীর্ঘ ২ বছর ধরে নির্মাণাধীন রয়েছে। নির্মাণাধীন অবস্থায় পানির থোরে ২০১৯ সালে সড়কটি ভেঙ্গে যায়। তার পর থেক এখনো সড়কটি মেরামত হচ্ছে না। বর্তমানে এ স্থানটিও সড়কে সমস্যার একটি অন্যতম কারণ।
ঢাকা থেকে ফেরা যাত্রী তাহিরপুর উপজেলা সদরের মধ্য তাহিরপুর গ্রামের অনুপম রায়। তিনি জানান, ঢাকা থেকে তিনি বৃহস্পতিবার বাড়ি ফেরেন। সুনামগঞ্জ আব্দুজ জহুর সেতুতে নেমে তিনি তাহিরপুর আসার জন্য সিএনজি নেন। আনোয়ারপুর বাজারের পূর্ব পাশে এসে দেখেন সড়কে পানি। পরবর্তীতে তিনি নৌকা যোগে এ স্থানটি পার হন। তিনি আশা করেন নি যে সামান্য পানিতে এ স্থানটি তলিয়ে যাবে।
উজান তাহিরপুর গ্রামের সিএনজি চালক রিপন মিয়া, তিনি জানান, বর্ষাতে সামান্য ঢলের পানির কারণে কম করে হলেও ৩০/৪০ দিন এ সড়কে সিএনজি চালাতে পারেন না।
এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী সুনামগঞ্জ মাহবুবুর রহমান বলেন, আনোয়ারপুর ব্রীজের এপ্রোচের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হলে সামন্য পাহাড়ি ঢলের পানিতে সড়কটি আর তলিয়ে যাবে না। তাছাড়া শক্তিয়ার খলা ও দুর্গাপুরের বিষয়টি নিয়েও আমরা ভাবছি কি করা যায়।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুনা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, সামান্য পাহাড়ি ঢলের পানিতে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পরে। সড়কটি দিয়ে চলাচলে স্থায়ী কোন পরিকল্পনা করা যায় কি না এ বিষয়ে জেলার উন্নয়ন সমন্বয় সভায় আলোচনা করবো।