কাজিরবাজার ডেস্ক :
ঘোষণা না দিয়ে হঠাৎ করে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় বাংলাদেশের বাজারে নিত্যপণ্যটির দাম নিয়ে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। এজন্য প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রটিকে পেঁয়াজ রপ্তানি পুনরায় শুরু করতে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ।
বুধবার ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের কাছে এ বিষয়ে একটি কূটনৈতিক চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র নিশ্চিত করেছে।
ভারতকে পেঁয়াজ রপ্তানি পুনরায় শুরু করতে অনুরোধ করা হবে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের আগে বাংলাদেশকে জানানোর কথা থাকলেও জানায়নি ভারত। তবে আবার রপ্তানির বিষয়ে দিল্লির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হয়েছে।’ ভারতকে দেয়া চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘১৪ সেপ্টেম্বর ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় আকস্মিক পেঁয়াজ রপ্তানির ঘোষণায় যে পরিবর্তন এনেছে, তাতে গভীর উদ্বেগ জানাচ্ছে বাংলাদেশ। এটা বাংলাদেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের সরবরাহকে সরাসরি প্রভাবিত করছে।’
গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশ-ভারতের বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের আলোচনার উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘সেখানে বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছিল, ভারত যেন বাংলাদেশে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের রপ্তানিতে বিধিনিষেধ আরোপ না করে এবং যদি কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করতে হয়, তাহলে বাংলাদেশকে যেন আগেই জানানো হয়।’
চিঠিতে আরও বলা হয়, গত অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরেও এমন বিধিনিষেধের বিষয় আগে জানানো নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। সর্বশেষ ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকারের হঠাৎ ঘোষণা বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে ২০১৯ ও ২০২০ সালে হওয়া আলোচনা এবং পারস্পরিক বোঝাপড়ায় গুরুত্ব দেয়া হয়নি।’
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও সমঝোতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানি পুনরায় শুরু করতে ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়।
গত সোমবার ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের খবর প্রকাশিত হলে প্রয়োজনীয় পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেয় বাংলাদেশের খুচরা ব্যবসায়ীরা। মাত্র দুই দিনের ব্যবধানে ৫০-৬০ টাকা দরের পেঁয়াজ এক লাফে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় উঠে যায়।
গত বছর সেপ্টেম্বরের শেষ দিকে হঠাৎ করে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারত। এতে বাংলাদেশে সব রেকর্ড ভঙ্গ করে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০০ টাকা পর্যন্ত পৌঁছে।
তবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন গতবারের অবস্থা এবার হবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা বিকল্প বাজার থেকে পেঁয়াজ আমদানি করার চেষ্টা করবো। গত বছর থেকে আমাদের তো কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে। মিয়ানমার, টার্কি, ইজিপ্ট, চায়না থেকে। বাইরে থেকে আমদানি করা সম্ভব হলে পরিস্থিতি ভালো হবে।’