কাজিরবাজার ডেস্ক :
সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছে। আর সমন জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার আদালতে সৌদির সাবেক এক গোয়েন্দা অ্যাজেন্টের দায়েরকৃত মামলায় যুবরাজের বিরুদ্ধে সমন জারি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে সৌদির সাবেক গোয়েন্দা অ্যাজেন্ট সাদ আল-জাবরি বলেছেন, তাকে বেশ কয়েকবার গুপ্তহত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সেসবের একটিও সফল হয়নি।
সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে মার্কিন আদালতে এমন এক সময় সমন জারি করা হলো; যার একদিন আগে কানাডায় হিট স্কোয়াড টিম পাঠিয়ে সাদ আল-জাবরিকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছিল উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় হিট স্কোয়াড (হত্যাকারী দল) পাঠানোর অভিযোগ আনা হয় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে।
সৌদি আরবের সাবেক এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা ২০১৭ সাল থেকে কানাডায় নির্বাসিত রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সৌদি আরবের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতেন তিনি।
রাজপরিবারের সম্ভাব্য প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছেন বলে সৌদি যুবরাজের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী ও অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা সাদ আল-জাবরিকে সতর্ক করে দেয়ার পর কানাডায় তার নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে।
মামলার অভিযোগে জাবরি বলেছেন, ‘বিন সালমান সম্পর্কে এত অপমানজনক, সংবেদনশীল এবং ভয়াবহ তথ্য ড. সাদের স্মৃতি এবং মস্তিষ্কের চেয়ে বেশি আর কোথাও সম্ভবত রক্ষিত নেই। যে কারণে অভিযুক্ত বিন সালমান জাবরিকে মৃত দেখতে চান এবং গত তিন বছর ধরে সেই লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করছেন।’
সৌদি আরবে বিরোধীদের দমনে ব্যাপক ধরপাকড় অভিযান শুরু হওয়ার পর ২০১৭ সালে তুরস্ক হয়ে কানাডায় পাড়ি জমান আল-জাবরি। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান স্বেচ্ছা-নির্বাসিত সাবেক এই গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করেন।
জাবরিকে দেশে ফেরাতে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিশও জারি করে সৌদি আরব। কিন্তু পরবর্তীতে সংস্থা অন্যান্য দেশের সমালোচনার মুখে রেড নোটিশ প্রত্যাহার করে নেয় ইন্টারপোল।
জাবরি বলেছেন, ২০১৮ সালের অক্টোবরে রাজপরিবারের সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার দুই সপ্তাহের মধ্যে কানাডায় টাইগার স্কোয়াডের সদস্য পাঠিয়ে দেন সৌদি যুবরাজ। এই স্কোয়াডের উদ্দেশ্য ছিল তাকে হত্যা করা।
সৌদি যুবরাজ ছাড়াও আরও ১২ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ার আদালত সমন জারি করেছেন। এতে বলা হয়েছে, আদালতের সমন জারির জবাব দিতে ব্যর্থ হলে অবধারিতভাবেই অভিযোগের ব্যাপারে রায় দেয়া হবে।