কাজিরবাজার ডেস্ক :
আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ্ব। বাংলাদেশে আজ ৮ জিলহজ্ব, আর সৌদি আরবে ৯ জিলহজ্ব। সে হিসেবে আজ সৌদি আরবে পবিত্র হজ্ব। কাল শুক্রবার সেখানে পবিত্র ঈদ-উল-আযহা। প্রতি বছর হিজরী বছরের শেষ মাস জিলহজ্বের ৯ তারিখ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়ার মাধ্যমে হজ্ব পালন করা হয়। এবার প্রাণঘাতী বৈশ্বিক মহামারী করোনার তান্ডবের দরুন সৌদি আরবসহ দেশটিতে বসবাসকারী বিশ্বের ১৬০ দেশের ১০ হাজার লোক পবিত্র নগরী মক্কার ঐতিহাসিক জাবালে রহমতের পাদদেশে আরাফাতের ময়দানে হজ্ব পালনে জমায়েত হবেন। এবার বিশ্ববাসী দেখবেন এক ব্যতিক্রমী হজ্ব। ইসলামের পাঁঁচটি মূল স্তম্ভের একটি হচ্ছে পবিত্র হজ্ব। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলমানের জন্য জীবনে একবার হজ্ব পালন করা ফরজ বা বাধ্যতামূলক। প্রতিবছর সপ্তাহব্যাপী এই আয়োজনে অংশ নিতে সৌদি আরবে সমবেত হন প্রায় ২৫ লাখ মুসলিম। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন।
জানা গেছে, নব্বই বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মাত্র ১০ হাজার হজযাত্রী নিয়ে আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে হজ্ব। করোনা প্রতিরোধে প্রতি ৫০ হজ্বযাত্রীর জন্য একজন করে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়েছে সৌদি সরকার। নিয়োগপ্রাপ্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক নেতা তার অধীনে থাকা হজ্বযাত্রীদের হজ্বকালে সকল সতর্কতা ও করোনা প্রতিরোধের সব ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন। মিনা, আরাফাহ ও মুজদালিফায় নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও বিভিন্ন পবিত্র স্থানসমূহ পরিদর্শনকালে শারীরিক সুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। সৌদি প্রেস এজেন্সির বরাত দিয়ে দেশটির জাতীয় দৈনিক সৌদি গেজেটে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।
হাজীদের ন্যূনতম পাঁচ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। তাওয়াফ, নামাজ, সাঈ প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে। এছাড়া মিনা, আরাফাহ ও মুজদালিফায় ২ আগষ্ট পর্যন্ত হাজীদের জন্য অবস্থান নির্ধারিত থাকবে।
এবার আরাফাত ময়দানে সমবেত মুসলিদের উদ্দেশ্যে দেয়া খুতবা সম্প্রচারের সময় বাংলাসহ মোট ১০টি ভাষায় তা অনুবাদের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষায় হজের এ সময়টিতে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে সৌদি সরকার। হাজীদের প্রত্যেকের করোনা পরীক্ষা করানো হয়েছে। হজ্ব শুরুর আগে দুই ধাপে কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আনুষঙ্গিক স্থাপনাগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। হজ্বের সময় সবাইকে মাস্ক পরার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হাজীদের প্রত্যেকের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। সংক্রমণ যাতে ছড়াতে না পাওে সেজন্য জমজমের পবিত্র পানি পানেও থাকছে বিধিনিষেধ। এবার সবার জন্য জমজমের পবিত্র পানি সরবরাহ করা হবে প্লাস্টিকের প্যাকেটে। সেই পানিই পান করতে হবে সবাইকে।