কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশের ১৬ জেলায় চলমান বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে শঙ্কার কথা জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।
শনিবার দুপুরে সচিবালয় থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।
এনামুর রহমান বলেন, ‘এক মাস হয়ে গেল বন্যা। ২৬ জুন থেকে বন্যা শুরু হয়, ১১ জুলাই থেকে দ্বিতীয় দফায় পানি বাড়ে এবং ২১ জুলাই থেকে তৃতীয় দফায় পানি বাড়ছে।’
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, সুমদ্রে জোয়ারের কারণে দেশের মধ্যাঞ্চলে বন্যার পানি কমতে দেরি হতে পারে। আর জোয়ারে সমস্যা না হলে আগস্টের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দেশের সব জায়গা থেকে বন্যার পানি নেমে যেতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী দুই দিনে মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, ঢাকা, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নাটোর, বগুড়া, জমালাপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল এবং নওগাঁ এই ১৬ জেলার বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে, তারপর পানি কমতে শুরু করবে।
এনামুর রহমান বলেন, বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে, এটা কিছুদিন অব্যাহত থাকতে পারে। গঙ্গা ও পদ্মা নদীর পানি বাড়তে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীর পানি কমছে। ঢাকা জেলার আশপাশের নদীর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়তে পারে।
বন্যায় ৩১ জেলায় এই পর্যন্ত আট লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ পরিবার পানিবন্দি হয়েছে বলে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘৩১ জেলা বন্যা কবলিত হয়েছে এবং বন্যা উপদ্রুত উপজেলার সংখ্যা ১৪৭টি। ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ৩৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭। এ পর্যন্ত ৩৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৮৮ হাজার ৬২ জন আশ্রয় নিয়েছেন।’
বন্যা মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্যায় ত্রাণ সহায়তা তদারকি করতে ছয়টি কমিটি করা হয়েছে। তারা উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ত্রাণ কার্যক্রমের দেখভাল করবে। আগামী ২১ দিন কমিটিগুলো এ দায়িত্ব পালন করবে।
বন্যার্তদের জন্য গত ২৮ জুন থেকে ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত তিন কোটি ৩৬ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা, ৫২ হাজার ১০ মেট্রিকটন চাল, এক লাখ ২১ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট, গো-খাদ্য কিনতে এক কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং শিশু খাদ্য কিনতে আরও ৭০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ১৪৭টি উপজেলায় আট লাখ ৬৫ হাজার ৮০০টি পরিবারের ৩৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৭ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এসব অঞ্চলে এক হাজার ৫১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে, সেখানে ৮৮ হাজার ৬২ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
বন্যার্তদের আশ্বস্ত করে ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ত্রাণের কোথাও কোনো সংকট নেই। আমাদের কাছে যেমন পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে, তেমনি জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড লেভেলেও পর্যাপ্ত মজুদ আছে।’
তিনি জানান, ৩৩৩ হেল্পলাইনের সঙ্গে সকল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। কোথাও কেউ খাবারের কষ্টে থাকলে ৩৩৩ নম্বরে যোগাযোগ করলে সেখানে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।