চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন

11

করোনা মহামারিতে নানা রকম সমস্যায় রয়েছে মানুষ। এটাই এ সময়ের বাস্তবতা। এ সময় বেকার হয়েছে অনেক মানুষ। অনেকের চাকরি আছে কিন্তু বেতন নেই বা অনিয়মিত। অসংখ্য পেশাজীবীর বেতন অর্থাৎ আয় কমে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে ভাটা, আমদানি-রপ্তানিতে স্থবির অবস্থা। সামগ্রিকভাবে একটা দুর্যোগ পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মানুষ। এ সময়টাকে ফায়দা হাসিলের জন্য বেছে নিয়েছে কিছু লোক।
দুর্যোগের এই সময়ে বিপদগ্রস্ত মানুষের ঘাড়ে চেপে বসেছে নতুন বোঝা জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি। চালের বাজার সাধারণ মানুষের জন্য বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। করোনাকালে সবচেয়ে বড় সুখবর নিয়ে এসেছিল দেশের কৃষি খাত। বোরো মৌসুম শেষ হয়েছে মাত্র, এবার ধানের ফলন হয়েছে প্রায় দুই কোটি মেট্রিক টন। আশা করা হয়েছিল, চালের দরে কিছুটা স্বস্তি মিলবে। কিন্তু সেটা আর হলো না। চালের বাজারে শুরু হয়েছে কারসাজি, মূলত চালকল মালিকদের কারণে।
নানা অজুহাত তাঁরা বরাবর দেখিয়ে থাকেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, চালকল মালিক ও নতুন একশ্রেণির ব্যবসায়ী ধান-চাল মজুদ করছেন। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতে খাদ্য অধিদপ্তর সব জেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তরে চিঠি দিয়েছে। খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর মতে, এই সময়ে চালের দাম এত বাড়ার কথা নয়।
সব ধরনের চালের দামই গত বছরের এই সময়ের তুলনায় কেজিতে ছয় থেকে সর্বোচ্চ ১৩ টাকা পর্যন্ত বেশি। মোটা চালের দাম বেড়েছে বেশি। পাইকারি বাজারে কেজিতে দুই থেকে চার টাকা দাম বেড়েছে। খুচরা বাজারে চাল বিক্রি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের খুশিমতো। করোনাকালে সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়লেও চালেই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে মানুষের। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসেও চালের দাম বেশি ছিল। আশা করা হয়েছিল, বোরো ধান ওঠার পর দাম কমবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। গত বছর এই সময়ে চালের যে দাম ছিল এবার জাতভেদে দাম ছয় থেকে ১৩ টাকা বেশি।
মানুষ কষ্টে আছে। এই সময়ে সবারই সংবেদনশীল হওয়া উচিত। কিন্তু কোনো কোনো পক্ষ সময়টাকে মুনাফাবাজির মওকা হিসেবে নিয়েছে, যা সাধারণ মানুষের জন্য বেদনাবহ। তাদের জীবন সহজতর করতে হবে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারকে তৎপর হতে হবে। যা জনপ্রত্যাশা।