কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দেশে নতুন করে এক কোটি ৬৪ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের কাতারে যুক্ত হয়েছে বলে ধারণা করছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান-বিআইডিএস।
বুধবার (২৪ জুন) বিআইডিএসের এক সংলাপে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ‘ইন দ্য শ্যাডো অব কোভিড কোপিং, অ্যাডজাস্টমেন্ট, রেসপন্সেস’ শীর্ষক বিআইডিএসের এই ক্রিটিক্যাল কনভারসেশন্স ওয়েবিনারে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো বিনায়ক সেন জানান, এই পরিস্থিতিতে সরকার দারিদ্র্য হ্রাসের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, তা অর্জন করা সম্ভব হবে না। পাশাপাশি কোভিডের সময়ে শহরের শ্রমিকের আয় কমেছে ৮০ শতাংশ এবং গ্রামীণ শ্রমিকের আয় কমেছে ১০ শতাংশ।
বিনায়ক সেন বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দেশে নতুন করে এক কোটি ৬৪ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের কাতারে যুক্ত হয়েছে।’
কোভিডের অভিঘাতে দেশে দারিদ্র্য বিমোচনের হার কমে যাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এতে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তা অর্জন করা কঠিন হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে ব্যক্তির স্বাস্থ্য ব্যয় হ্রাসে এই খাতে বরাদ্দ জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি সরকারকে আরও সমতাভিত্তিক মডেল অনুসরণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড ১৯-এর প্রভাব কাটাতে স্বল্প বা দীর্ঘমেয়াদি আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ লকডাউন অর্থনৈতিকভাবে টেকসই নয়। এতে যেমন দারিদ্র্যের হার বেড়েছে, অন্যদিকে কোভিডের আগেই যারা দরিদ্র ছিলেন, তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে।
বিআইডিএসের এই সিনিয়র ফেলো আরও বলেন, ‘সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে এই ক্ষতি পূরণ করা যাবে না। বরাদ্দ বাড়িয়েও লাভ হবে না। কারণ, এই ভাতা ও সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ভুল মানুষ বাছাই করার প্রবণতা আছে দেশে। ফলে যাদের দরকার, তাদের অনেকেই তালিকায় ঢুকতেই পারেন না। দেখা গেছে, সামাজিক নিরাপত্তার বিভিন্ন ভাতা বিতরণে অদরিদ্র ও সচ্ছল মানুষের সংখ্যা ৩০ শতাংশ, খাদ্য সহায়তার ক্ষেত্রে সেটা ৩২ শতাংশ, মাতৃত্বকালীন ভাতার ক্ষেত্রে ৪৪ শতাংশ, বৃত্তির ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ।’
কে এ এস মুর্শিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, বিশেষ অতিথি সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমানও বক্তব্য রাখেন।