মাহবুব আহমদ খান, বিয়নীবাজার থেকে :
বিয়ানীবাজারে ৩ বছরের শিশু সায়েল আহমদ ওরফে সুহেল খুনের লোমহর্ষক তথ্য পাওয়া গেছে। অনৈতিক কাজ দেখে ফেলায় আপন চাচী ও তার পরকিয়া প্রেমিক মিলে সুহেলকে শ্বাসরোধের মাধ্যমে হত্যা করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক দু’জন এ তথ্য দিয়েছে। গত রবিবার সকালে উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজনা গ্রামে নৃশংস এ ঘটনা ঘটে।
বিয়নীবাজার থানা পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে নিহত শিশুর আপন চাচী সুরমা বেগম (৩৮) ও তার পরকিয়া প্রেমিক নাহিদুল ইসলামকে (২৬) গ্রেফতার করে গতকাল সোমবার আদালতে প্রেরণ করেছে। তারা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খুনের বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। নাহিদুল চারখাই এলাকার কামাল মিয়ার পুত্র হলেও সে ঐ গ্রামে তার মামার বাড়িতে বসবাস করে।
পুলিশের তথ্য মতে, গত রবিবার সকাল ৬টার দিকে চাচীর বসতঘরের সামনে আম কুড়াতে যায় ভিকটিম সুহেল ও তার ভাই আরিফ। আম কুড়ানো শেষে সুহেল চাচীর বসতঘরের ভিতরে প্রবেশ করলে নাহিদুল ও সুরমা বেগমের অনৈতিক মেলামেশা দেখে চিৎকার শুরু করে। তখন নাহিদুলের নির্দেশে সুরমা বেগম গাছের ডাল দিয়ে প্রথমে শিশুর মাথায় আঘাত করলে সে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তখন চাচী ও তার প্রেমিক শিশুর নাক-মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে গোসলখানায় থাকা একটি প্লাষ্টিকের ড্রামে ঢুকিয়ে কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখে।
উল্লেখ্য যে, এ ঘটনার পর রবিবার দিনভর সুয়েলকে খোঁজা হলে কোথায়ও তাকে পাওয়া যায়নি। মসজিদের মাইক ও সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে তার খোঁজে প্রচারণা চালানো হয়। এ সময় সুরমা বেগম তার বসতঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখাসহ রহস্যজনক আচরণ করতে থাকেন। এতে নিহত শিশুর পিতাসহ এলাকার লোকজনের সন্দেহ হলে তার বসতঘরে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে রাত ৮টার দিকে সুরমা বেগমের গোসলখানায় রাখা ড্রামের ভিতর কম্বল দিয়ে মোড়ানো শিশু সুহেলের নিথর দেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় গতকাল সোমবার নিহত সুহেলের পিতা খসরু মিয়া বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে বিয়ানীবাজার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ৬।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অবণী শংকর কর জানান, শিশু সুহেল হত্যাকাণ্ডে জড়িত নাহিদুল ইসলাম ও সুরমা বেগমকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় অপর আসামীকে গ্রেফতারের তৎপরতা চলছে।