কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ যখন করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীকে আক্রমণ করেছে তখন আমাদের স্বাস্থ্যখাত যে কত ভঙ্গুর তা প্রমাণ হয়ে গেছে। আমাদের সরকার উন্নয়নের কথা বলে, প্রবৃদ্ধির কথা বলেন। কিন্তু কোনো প্রবৃদ্ধি, কোনো উন্নয়ন সফল হবে না, যদি না সত্যিকার অর্থেই বৃহত্তর জনগোষ্ঠী তা থেকে লাভবান হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে ‘শহীদ জিয়ার কৃষি বিপ্লব’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৩৯তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, আমরা ভুলে যাই যে, ১৯৭৪ সালে আওয়ামী লীগের দুর্নীতির কারণে, ভুল নীতির কারণে ভয়াবহ রকম একটা দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে, তখন দশ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। তখন খাদ্যের অভাব ছিল না। অমর্ত্য সেন তার বইয়ের মধ্যে পরিষ্কার করে বলেছেন, এটা ছিল মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ। অর্থাৎ এক দিকে ম্যানেজমেন্টের সমস্যা, অন্যদিকে দুর্নীতি।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান দায়িত্বে আসার পর যখন কৃষির ওপর গুরুত্ব দিয়ে একদিকে সেচের ব্যবস্থা করলেন, অন্যদিকে উন্নত বীজের ব্যবস্থা করলেন। কৃষি উপকরণগুলো সহজলভ্য করলেন, সার-কিটনাশকের ব্যবস্থা করলেন। তখন আবার দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হল। আরেকটি যুগান্তকারী কাজ তিনি করেছিলেন। পল্লী বিদ্যুৎ তিনি নিয়ে এসেছিলেন। গ্রামীণ অর্থনীতিতে অনেক বেশি ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল এই পল্লী বিদ্যুৎ।
ফখরুল বলেন, আজকে যখন আমরা এই ভয়ঙ্কর কোভিড-১৯ মোকাবেলা করছি এবং জনগণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সরকারের ভ্রান্ত নীতির কারণে। তখন বার বার জিয়াউর রহমানের কথা মনে হয়। তার নেতৃত্ব যদি আর কিছু দিন পেতাম, তাহলে হয়তো এই ভঙ্গুর স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও অর্থনীতি দেখতে হতো না। তারপরও আমরা আশাবাদী। জিয়ার আদর্শ, ১৯ দফা কর্মসূচি, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ- এইগুলোকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তারই যোগ্য উত্তরসূরি ছিলেন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। তিনি যখনই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসেছেন তখনই কৃষির ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। কৃষকেরা কৃষি ঋণের ব্যাপারে হয়রানি হতো, ঋণ পরিশোধ করতে না পেরে গ্রেফতার হতো। ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে সুদসহ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত কৃষি ঋণ মওকুফ করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। ২০০১ সালে একইভাবে ১০ হাজার টাকা মওকুফ করে দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, মসলার জন্য মাত্র দুই শতাংশ সুদে ঋণের ব্যবস্থা করেছিলেন খালেদা জিয়া। কৃষি অধিদফতরকে শক্তিশালী করেছিলেন। যারা ব্লক সুপারভাইজার ছিলেন, তাদেরকে তিনি কৃষি সহকারী হিসেবে পদমর্যাদা দিয়েছিলেন। তার সময় ডেইরি ফার্ম অনেক বেশি বিস্তার লাভ করেছিল। তিনি ছোট ছোট খামাড় মালিকদের অনুদান দিয়েছিলেন। পোল্ট্রি উন্নয়নের জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন। মাছ চাষীদের প্রণোদনা দিয়েছিলেন।