হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে ৩ দিনের মাথায় ভারতীয় নাগরিকদের গণপিটুনিতে নিহত বাংলাদেশী যুবকের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ৩য় দফায় বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক শেষে তার লাশ হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন-৫৫ বিজিবির সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘নিহতের পরিবার ও আমাদের দাবি ময়নাতদন্তের কপি ও যাবতীয় কাজপত্রসহ লাশ হস্তান্তর করায় আমরা গ্রহণ করেছি।’
এর আগে বুধবার প্রথম দফা ও বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক শেষে ময়নাতদন্তের কপিসহ যাবতীয় কাগজপত্র ছাড়া ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ লাশ হস্তান্তর করতে চায়। কিন্তু এতে রাজি হয়নি নিহতের পরিবার ও বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি।
জানা গেছে, গত ২৪ মে মাধবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ধর্মঘর ইউনিয়নের মালঞ্চপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাসিমের ছেলে লোকমান মিয়া অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের মোহনপুর এলাকায় তার ফুফুর বাড়ি যাচ্ছিলেন। এ সময় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গোপালনগর পৌঁছাতেই একদল ভারতীয় নাগরিক লোকমান হোসেনকে ‘গরুচোর’ সন্দেহে এলোপাতাড়িভাবে পেটাতে থাকে। পরে মৃত ভেবে লোকমানকে ভারতীয়রা বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে একটি জঙ্গলে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের সিধাঁই থানা পুলিশ মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ভারতের একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে লোকমানের মৃত্যু হয়। পরে বুধবার বিকালে ১৯৯৪/৪ এস পিলারের নিকট বাংলাদেশের মোহনপুুুর নামকস্থানে বিজিবি-বিএসএফ এর মধ্যে প্রথম দফায় পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ভারতের পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের মোহনপুর সীমান্ত দিয়ে লাশ হস্তান্তরের কথা থাকলেও ভারতীয় পুলিশ ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্টসহ যাবতীয় কাগজপত্র ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করতে চায়। এতে বাংলাদেশের বিজিবি-পুলিশের প্রতিনিধিরা লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। বৃহস্পতিবার আবারও দুই পক্ষের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়ও ভারতীয় পুলিশ যাবতীয় কাগজপত্র ছাড়া লাশ হস্তান্তর করতে চাওয়ায় লাশ গ্রহণ স্থগিত হয়। অবশেষে শুক্রবার বিকেলে আবারও পতাকা বৈঠকে বসে বিজিবি-বিএসএফ। সেখানে ময়নাতদন্তের কাগজপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র দেয়ায় লাশ গ্রহণ করে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষি ও নিহতের পরিবার।