জগন্নাথপুরে দুই সতীনের ঝগড়ার বলি ভাসুর

28
নিহত রোয়াব আলী।

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে দুই সতীনের ঝগড়ার বলি হয়েছেন ভাসুর। হতভাগ্য ভাসুরের নাম রোয়াব আলী (৫৫)। তিনি উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের নাদামপুর গ্রামের আবদুর রউফের ছেলে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
নাদামপুর গ্রামের বিয়ে পাগল নাসির উদ্দিন ৩টি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভাইয়ের স্ত্রীও রয়েছেন। বর্তমানে এক স্ত্রী প্রবাসে ও আরেক স্ত্রী ফরিনা বেগম শিশু সন্তানদের নিয়ে সিলেটের লালা বাজার এলাকায় পিত্রালয়ে বসবাস করলেও ছোট স্ত্রী মমিনা বেগম বাড়িতে বসবাস করছেন। তবে ঈদ উপলক্ষে ফরিনা বেগম তার অবুঝ শিশুদের নিয়ে স্বামীর বাড়ি নাদামপুর আসেন। তিনি আসার পর থেকেই দুই সতীনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।
অবশেষে ২৭ মে বুধবার রাত ৮ টার দিকে দুই সতীনের ঝগড়া থামাতে গিয়ে নাসির উদ্দিনের বড় ভাই রোয়াব আলী মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছেন। জগন্নাথপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্তক্রমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে ২৮ মে বৃহস্পতিবার সরজমিনে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহত রোয়াব আলীর স্বজনদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। তাদের সাথে গ্রামের আবাল-বৃদ্ধ বণিতা সবাই কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। এ সময় স্বজন সহ স্থানীয়রা জানান, বিয়ে পাগল নাসির উদ্দিনের কীর্তির কারণে প্রাণ হারালেন তার বড় ভাই রোয়াব আলী। তিনি খুবই ভাল মানুষ ছিলেন। দুই সতীনের ঝগড়ার সময় শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে তাকে মরতে হয়েছে। নিহত রোয়াব আলীর বোনরা অভিযোগ করে বলেন, নাসির উদ্দিনের ছোট স্ত্রী মমিনা বেগমের আঘাতে রোয়াব আলীর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে মমিনা বেগম বাড়ি ছেড়ে পিত্রালয়ে পালিয়ে গেলেও অন্যদের তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। যদিও অভিযুক্ত মমিনা বেগম কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে-নাসির উদ্দিনের ৩য় তলা আলিশান বাড়ি রয়েছে। বাড়িতে সব সময় কেছি গেইট বন্ধ থাকে। যে কারণে গেইট বন্ধ থাকায় প্রতিবেশিরা ঘটনার সময় বাড়িতে ঢুকতে পারেননি। বাড়িতে ঢুকতে পারলে হয়তো রোয়াব আলীকে বাঁচানো যেত বলেও প্রতিবেশিরা জানান। এছাড়া ঘটনার পর থেকে নাসির উদ্দিন বাড়ির সকলকে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন বলে তার স্বজনরা জানান। যদিও নাসির উদ্দিনকে পাওয়া যায়নি।