কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনায় ভাইরাসের (কোভিড-১৯) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নানা উদ্যোগ ও অবদানের মাধ্যমে চিকিৎসক, গ্রাহক এবং ক্ষতিগ্রস্ত খুচরা ব্যবসায়ীদের পাশে দাড়াঁনোর ঘোষণা দিয়েছে গ্রামীণফোন।
আগের নানা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা হিসেবে নতুন এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কোভিড-১৯ মোকাবিলায় এখন পর্যন্ত গ্রামীণফোনের সব প্রতিশ্রুত উদ্যোগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০০ কোটি টাকা।
শুক্রবার (০৮ মে) বিকেলে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান এ কথা জানান।
গ্রামীফোন শুরু থেকেই কোভিড-১৯ এর পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যালোচনা করে আসছে এবং সে অনুযায়ী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নানা উদ্যোগের মাধ্যমে করোনা মোকাবিলায় অবদান রাখছে।
এসব উদ্যোগের ঘোষণাকালে ইয়াসির আজমান বলেন, দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমাদের আগে কখনও এমন সংকটপূর্ণ অবস্থার মুখোমুখি হতে হয়নি। এমন একটি সংকট আসবে এবং সেটি এভাবে আমাদের জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, সেটা কেউই চিন্তা করতে পারেনি। তাই সময় এখন সবাই এক সঙ্গে এর মোকাবিলা করার। ধৈর্য, বোঝাপড়া, সহানুভূতি নিয়ে আমাদের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। এটা আমাদের সবার জন্য একটি পরীক্ষা এবং আমার বিশ্বাস একতাবদ্ধ হওয়ার মাধ্যমে এ চলমান সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারি নানা কর্তৃপক্ষ, উন্নয়ন সংস্থাসহ সামগ্রিকভাবে শিল্পখাতের সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাকে সত্যিকারভাবে উৎসাহিত করেছে।
গ্রামীণফোন বিশ্বাস করে সরকার ও বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে এই সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব।
ইয়াসির আজমান আরও বলেন, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারকে সহায়তায় অনুকরণীয় সব উদ্যোগ গ্রহণে গ্রামীণফোন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, এটুআই, ব্র্যাক, বিটিআরসি, ডব্লিউএইচও, ইউনিসেফ, ইউএনডিপি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং শিল্পখাতের অন্যান্য অংশীদারদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।
করোনা মোকাবিলায় সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের ধারাবাহিক সহায়তার অংশ হিসেবে এ পর্যায়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বীকৃত ২৫ হাজার চিকিৎসকের সহযোগিতা কার্যক্রম আরও প্রসারিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গ্রামীণফোন। এ কার্যক্রমের আওতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর স্বীকৃত চিকিৎসকদের এক টাকা টোকেন মূল্যের বিনিময়ে প্রতিমাসে ৩০ জিবি ইন্টারনেট দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই সুবিধা নির্ধারিত চিকিৎসকদের জন্য আগামী ছয় মাস পর্যন্ত চলমান থাকবে।
এছাড়াও এপ্রিল মাসে রিচার্জ করতে পারেননি বা যাদের ব্যালেন্স নেই বললেই চলে এমন শনাক্ত করা গ্রাহকদের ১০ কোটি মিনিটি ফ্রি টক টাইম (গ্রাহক প্রতি ১০ মিনিট) দেওয়া শুরু করেছে গ্রামীণফোন। প্রতিষ্ঠানটির এ উদ্যোগ মূল্যবান গ্রাহকদের প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগে সহায়তা করবে।
এছাড়া জরুরি সেবাদাতা হিসেবে গ্রামীণফোন এ সংকটকালীন সময়ে এর সাড়ে সাত কোটি গ্রাহকের জন্য সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত প্রতি মিনিট কলরেট ৪৮ পয়সা করেছে।
লকডাউন পরিস্থিতিতে ডেটার ব্যবহার বৃদ্ধি মূল্যায়ন করেছে গ্রামীণফোন। যেহেতু এখন দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জরুরি সেবা চলছে ইন্টারনেটের ওপর ভিত্তি করে, তাই মাইজিপি অ্যাপ থেকে কেনা সব সাপ্তাহিক ডেটা প্যাকে ১০০ শতাংশ বোনাস ঘোষণা করেছে গ্রামীণফোন।
এ প্রতিকূল সময়ে গ্রাহক সেবাদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন গ্রামীণফোনের খুচরা ব্যবসায়ীরা। তাদের কথা চিন্তা করে এ সংকটের সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত খুচরা ব্যবসায়ীদের সহায়তায় গ্রামীণফোন ১০ কোটি টাকা সমমানের সেফটি-নেট ক্রেডিট স্কিমের ঘোষণা দিয়েছে।
এসব উদ্যোগের পাশাপাশি দেশের অতি-দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তায় গ্রামীণফোন ব্র্যাকের সঙ্গে নিজেদের যৌথ প্রচেষ্টা ‘ডাকছে আমার দেশ’ উদ্যোগের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। এ কার্যক্রমে গ্রামীণফোন ইতোমধ্যে এক লাখ পরিবারকে ১৫ কোটি টাকার খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। এছাড়া করোনা মোকাবিলায় চিকিৎসক ও স্বস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্ধারিত হাসপাতালে ৫০ হাজার প্রফেশনাল পিপিই দিয়েছে গ্রামীণফোন।
সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণফোনের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হাসিব, প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা খায়রুল বাসারও অংশ নেন।