কাজিরবাজার ডেস্ক :
করোনা মহামারির পরিস্থিতিতে সরকারি ছুটির মধ্যে পারিবারিক সহিংসতা বেড়ে গেছে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক জরিপ বলছে, শুধু এপ্রিল মাসেই দেশে ৪২৪৯ নারী পারিবারিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
সংস্থাটি বলছে, এপ্রিলে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৮৪৮ জন, মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন প্রায় ২ হাজার এবং ১৩০৮ জন অর্থনৈতিক নির্যাতনের (খাদ্য ও অর্থাভাব) শিকার হয়েছেন।
এছাড়া যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৮৫ জন। এ সময়ে ৩৩টি বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার, ‘বাংলাদেশে লকডাউন পরিস্থিতিতে নারী নির্যাতন’ শীর্ষক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)।
জরিপে বলা হয়েছে, এপ্রিল মাসে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে ৪২টি। এর বাইরে অন্তত ৪২৪টি শিশু পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
মাঠ পর্যায়ের ২৪টি সহযোগী সংস্থা ২৭ জেলা থেকে তথ্য সংগ্রহ করে জরিপটি চালানো হয়েছে। এ সময় মোট ১৭ হাজার ২০৩ জন নারীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে নির্ধারিত প্রশ্নের ভিত্তিতে সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম জানান, সব তথ্য এখনো বিশ্লেষণ করা হয়নি। লকডাউনের কারণেই পারিবারিক সহিংসতা বেড়েছে কি না তা এখনও বলা যাচ্ছে না।
তবে ইউএনএফপিএ যে বৈশ্বি সমীক্ষা চালিয়েছে, তাতে দেখা গেছে, করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী পারিবারিক নির্যাতন ২০ শতাংশ বেড়েছে।
২৭টি জেলায় জরিপ পরিচালনা করা হলেও দেশের অন্যান্য জেলার অবস্থা একইরকম বলে মনে করে এমজেএফ।
পারিবারিক সহিংসতা বন্ধের ব্যাপারে সরকারকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান শাহীন আনাম।
এছাড়া ছুটির মধ্যে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে হটলাইন ১০৯ ও পুলিশি সহায়তার জন্য ৯৯৯ আরও বেশি কার্যকর করার অনুরোধ জানিয়েছেন বক্তারা। পাশাপাশি, সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে নারীরা যাতে আশ্রয় পেতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা, করোনা পরিস্থিতিতে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল চলমান রাখার জন্য ‘ভার্চুয়াল কোর্ট অর্ডিন্যান্স’ দ্রুত পাশ করার পরামর্শও জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এমজেএফ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া ও বান্দরবান থেকে সহযোগী সংস্থার সদস্যরাও যুক্ত ছিলেন।