বাংলাদেশ শুধু নয়, বিশ্বের বড় বড় অর্থনীতিও আজ করোনার অভিঘাতে বিপর্যস্ত। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সব দেশ আজ নতুন নতুন কর্মসূচি হাতে নিতে যাচ্ছে। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় শিল্প খাতের জন্য সরকার ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এই প্রণোদনার অর্থের জোগান দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার একটি পুনরর্থায়ন তহবিলও গঠন করা হয়েছে। এই তহবিল থেকে কিভাবে প্রণোদনার ঋণ বিতরণ করা হবে তার নীতিমালাও বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণয়ন করেছে। কিন্তু প্রণোদনা তহবিলের ব্যবহার নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা নীতিমালা বাস্তবায়নে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, এই ধোঁয়াশা বেশ কিছু ধারা ও উপধারা নিয়ে, যেগুলোর সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই নীতিমালায়। ফলে এই তহবিলের প্রকৃত সুবিধাভোগী কারা হবেন, তা নিয়ে অন্ধকারে আছেন ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা। খবরে আরো বলা হচ্ছে, সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে ব্যাংকের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে চালু থাকলেও ঋণ বিতরণ বন্ধ রয়েছে। এতে বেশ সমস্যায় পড়েছেন ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা। কারণ এই সময়ে উৎপাদনের সঙ্গে সরবরাহপ্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় আয় করতে পারছে না শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো। অন্যদিকে শ্রমিক-কর্মচারীর বেতন, বাধ্যতামূলক গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল এবং দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি সব ঋণের সুদ আরোপ অব্যাহত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের জন্য ঋণ পাওয়া অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। অথচ গত দুই মাস ব্যাংকের বোর্ডসভা বন্ধ থাকায় কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে ঋণ প্রস্তাব পেশ করা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ঋণখেলাপি এই তহবিলের ঋণ সুবিধা পাবেন না। কিন্তু খেলাপি হওয়ার সময় উল্লেখ না থাকায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
যেহেতু জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, সেই জটিলতা দূর করা দরকার। সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে অর্থনীতিতে গতি আনার জন্য। প্রণোদনার অর্থ যেন সঠিকভাবে ব্যবহার হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রণোদনা প্যাকেজের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় সরকারের প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি এনজিও, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি তদারকি কমিটি গঠনের প্রস্তাবও উঠেছে বিভিন্ন পক্ষ থেকে।