করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট বৈশ্বিক মহামারীর মধ্যেও দেশের ১৬৬ টি চা-বাগানের প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার চা ও রাবার শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করানোয় গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করে অবিলম্বে মজুরি-রেশনসহ সকল শ্রমিকদের ছুটি প্রদান করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ রেজিঃ নং বাঃজাঃফেঃ-০৫ এর মৌলভীবাজার জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দ। সংগঠনের জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ নুরুল মোহাইমীন ও সাধারণ সম্পাদক রজত বিশ্বাস এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন গত ২৬ মার্চ হতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি ও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে গিয়ে ইতোমধ্যে দেশের অধিকাংশ জেলায় লকডাউন চলছে। সরকার করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনগণকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দিচ্ছেন, এমন কি কোন কোন ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জোরপূর্বক জনগণকে ঘরে থাকতে বাধ্য করছেন। সেই সময় চা ও রাবার শ্রমিকদের আন্দোলন ও দাবি উপেক্ষা করে মালিকগোষ্ঠি তাদের অতি মুনাফার মানসে চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে শ্রমিকদের কাজ করতে বাধ্য করাচ্ছেন। মালিকদের স্বার্থরক্ষাকারী সরকারও শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করছেন না। বলা বাহুল্য চা ও রাবার জীবনরক্ষাকারী এমন কোন জরুরী পণ্য নয় যে এই দুর্যোগের মুহূর্তেও উৎপাদন অব্যাহত রাখতে হবে। উপরন্তু চলতি বছর বৃষ্টিপাত না হওয়ায় চা উৎপাদনের মৌসুমও শুরু হয়নি, তাই চা শ্রমিকদের ছুটি প্রদান করলে মালিকদের আর্থিক ক্ষতিও খুব বেশি হবে না। প্রধানমন্ত্রী অনেকের জন্য কমবেশি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, প্রণোদনা, ঝুঁকি ভাতা, স্বাস্থ্যবীমার ঘোষণা দিলেও চা ও রাবার শ্রমিকদের বিষয়ে রাষ্ট্র ও সরকারের নিরবতা বড়ই দুর্ভাগ্যজনক। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চতুর্থস্তরে বাংলাদেশ প্রদান করেছে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন চা-শ্রমিকরা কোলনীতে দুই কক্ষ বিশিষ্ট ২২২ বর্গফুটের যে বাসাতে গাদাগাদি করে ৭/৮ জন বসবাস করেন তাতে যদি কোন ভাবে চা-বাগানের একজন শ্রমিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন তাহলে কোনভাবেই তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। যেখানে চা-শ্রমিকরা বসবাসের জন্য ন্যূনতম মাথা গোঁজার জন্য প্রাণাতিপাত করতে হয় সেখানে কোয়ারান্টাইন বা আইসোলেশনের কথা তো ভাবাই যায় না। এরকম পরিস্থিতিতে অবিলম্বে পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসুরক্ষা নিশ্চিত করে মজুরি-রেশনসহ সকল চা ও রাবার শ্রমিকদের ছুটি প্রদানের দাবি জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তি