কাজিরবাজার ডেস্ক :
কারাগারে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দী থাকায় তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ দেখা দিতে পারে; এমন আশঙ্কায় তিন হাজারের বেশি কয়েদি ও হাজতির মুক্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কিন্তু এই প্রক্রিয়াটি অনেকটা ঝুলে গেছে। কারা কর্তৃপক্ষের পাঠানো তালিকা প্রস্তাব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় সেটি এখনো আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এটি প্রক্রিয়াধীন। যদিও কবে নাগাদ সেটা আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কেউ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরীফ মাহমুদ অপু বলেন, ‘বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কাজ শেষ হলেই সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।’ কত সময় লাগবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা বলা যাচ্ছে না।’
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় সংক্রমণ ঝুঁকি এড়াতে বিভিন্ন মামলায় বিচারাধীন তিন হাজারের বেশি হাজতিকে সাময়িকভাবে মুক্তি দেওয়ার কথা সরকারের ভাবনায় ছিল। হাজতিদের একটি তালিকা তৈরি করে প্রস্তাবও পাঠায় কারা-কর্তৃপক্ষ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্যোগে কারা কর্তৃপক্ষ ওই তালিকা তৈরি করে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রক্রিয়া শেষে সেটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা রয়েছে। এরপর আদালত মুক্তির বিষয়টি সিদ্ধান্ত নেবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের করোনা প্রতিরোধ সমন্বয় সেলের তথ্য অনুযায়ী কারাগারে করোনাভাইরাসের কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। তবে ঠান্ডা, জ্বর ও কাশির লক্ষণ থাকায় প্রায় ৫০ জন বন্দিকে সতর্কতা হিসেবে পৃথকভাবে রাখা হয়েছে। কোনো বন্দি করোনা আক্রান্ত হলে তাদের জন্য কয়েকটি কারাগারে আইসোলেশন সেন্টার খোলা হয়েছে। এছাড়া কারাগারে বন্দীদের সাক্ষাৎ সীমিত করা হয়েছে।
কারা-অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মো. আবরার হোসেন বুধবার গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে এই প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। যাদের মামলা এখনো বিচারাধীন, জামিনযোগ্য অপরাধ হলে এদের জামিন দেওয়া যায় কি না, জামিনযোগ্য ছোট-খাটো অপরাধে যারা কারাগারে রয়েছেন, এরকম তিন হাজারের সামান্য বেশি হাজতির নাম প্রস্তাবে রাখা হয়েছে। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন মন্ত্রণালয়ের পর শেষ পর্যন্ত বিচারকই সিদ্ধান্ত নেবেন জামিন দেওয়া যায় কি না। মুক্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ বিচারকদের হাতে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
এদিকে শুক্রবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, কয়েদি ও হাজতিদের জামিনে মুক্তির বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের পাঠানো প্রস্তাবনা এখনো আমার দপ্তরে পৌঁছেনি। সেই প্রস্তাবনা যাচাই ও আইনি প্রক্রিয়া বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আগে প্রস্তাবনা হাতে আসুক, তারপর মন্তব্য করা যাবে।