করোনা প্রতিরোধ সচেতনতা

34

বনশ্রী বড়ুয়া
মানুষই সভ্যতার আধুনিকায়নের মূল। বিজ্ঞান আর মানুষের অপরিমেয় জ্ঞান মিলিত হয়ে সৃষ্টির উল্লাসে মেতেছিল। সেই উল্লাসের প্রতিদান এভাবে আসবে পৃথিবীর মানুষ কল্পনাও করতে পারেনি। ১০০ ন্যানোমিটার ব্যাসধারী নোভেল করোনাভাইরাস- ১৯ আজ মানুষে মানুষে ছড়িয়ে পড়েছে। এক উন্মাদ পোকার মত যাকে পাচ্ছে তাকেই কামড়ে ধরছে। ছড়িয়ে দিচ্ছে মৃত্যুর বার্তা। লাশের সারি নয়, যেন লাশের মিছিল। দলে দলে মরছে সারা বিশ্বের মানুষ। অসহায় মুখ করে ফিরছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের অপরিমেয় ধারক মানুষ। না আছে ভ্যাকসিন না আছে বাঁচার উপায়।
তারপরেও চলছে প্রতিরোধের চেষ্টা। বারবার হাত ধুয়ে নেয়ার কথা, মাস্ক ব্যবহারের কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। স্যানিটাইজার ব্যবহারের কথা বলছেন, কিন্তু ভেবে দেখেছেন কি যেখানে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্তরাই বিভিন্ন শপিং মল কিংবা ফার্মেসিতে খুঁজে পাচ্ছেন না এই স্যানিটাইজার বা হ্যান্ড ওয়াশিং সেখানে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষগুলো কিভাবে পরিষ্কার রাখবে নিজেদের।
এ দেশে চাহিদার তুলনায় যোগান অপ্রতুল সেটা সারাজীবন ধরেই জেনে এসেছি আমরা। এ দুর্দিনে সেটা আরো প্রকোপ আকার নিয়েছে। তাই হাতের কাছে যা পাওয়া যায় তাই দিয়ে অনেকেই সুরক্ষার একটা কবজ বানিয়ে ফেলছে। সাধারণ মানুষগুলোকে সুরক্ষা দিতে না পারলে আমি আপনি কেউ কি বাঁঁচবো? তাই খুব সাধারণ পদ্ধতি এবং সাধারণ কিছু জিনিস যা হাতের কাছে পাওয়া যায় তা দিয়ে কি করে
স্যানিটাইজার বানানো যায় তার একটি সহজ পদ্ধতিঃ ঘরেই বসেই বানাতে পারেন হেক্সিসলের মতো হ্যান্ড রাব বা স্যানিটাইজার।
প্রক্রিয়াকরণ ধাপঃ
১। ৭৫ গ্রাম ওজনের ডেটল সাবান পেঁয়াজ ঘষে নেয়ার যেকোনো স্লাইজারে গুঁড়ো করতে হবে।
২। পাতিলে সাবানের গুঁড়ো রেখে তিন চা চামচ হেক্সিসল দিতে হবে।
৩। এক লিটার পানি পাতিলে ঢেলে সব দ্রব্য সংমিশ্রণ করে চুলোর আগুনে বসিয়ে নাড়াতে হবে।
৪। চুলো হতে নামিয়ে ঠান্ডা করে বোতলজাত করে ফেলুন।
৫। আধঘণ্টা পরই লিকুইডের মতো হয়ে যাবে।
বাজারে যেহেতু টাকা দিয়েও হেক্সিসল পাওয়া যায় না, পেলেও দাম অনেক বেশি, তাই ছোটখাটো একটা হেক্সিসল সংগ্রহ করে এইভাবে বানিয়ে নিতে পারেন হ্যান্ডওয়াশিং বা স্যানিটাইজার। এটি ঘরের চারপাশে এবং হাতধোয়ার সময় ব্যবহার করুন।পনের বিশ মিনিট অন্তর হাত ধুয়ে নিন। সাবান অনুযায়ী হেক্সিসল ও পানি কম বেশি দিতে পারেন। এটি আপনাকে জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করবে। বিশ্বের দুর্দিনে যখন মুখথুবড়ে পড়ে আছি আমরা। যখন অসহায়ের মত ভাগ্যের পানে চেয়ে আছি। তখন কিছু সর্তকতায় পারে মুক্ত করতে আমাদের। রুকে দাঁড়াতে হবে এই ১০০ ন্যানোমিটার ব্যাসধারী নোভেল করোনাভাইরাস- ১৯ এর বিরুদ্ধে। নিজেকে এবং পরিবার তথা দেশ ও বিশ্বকে বাঁচাতে আসুন আমরা হাতে হাত রাখি। সঠিক সময়ে বিনাশ করতে না পারলে যেকোন সমস্যায় মহামারী আকার ধারণ নেবে করোনা নামী এই ভাইরাসটি। আসুন সচেতন হই, সচেতন করি।