হাসপাতাল ও মৃত্যুর উপত্যকা নিউইয়র্ক

12

কাজিরবাজার ডেস্ক :
ভয়াবহ বললেও কম বলা হয়। বুধবার দিনটিকে এই সময়ের অন্যতম ‘অভিশপ্ত’ দিন হিসেবে চিহ্নিত করলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং স্পেনে করোনার দাপটে সব চেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। যুক্তরাষ্ট্রে মোট আক্রান্ত ছাড়িয়ে গেল দুই লাখ। বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল নয় লাখ। ফের আশঙ্কা প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
কার্যত হাসপাতালে পরিণত হয়েছে নিউইয়র্ক শহর। নিউইয়র্কেই মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে ৮৩ হাজার। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, শুধু বুধবারেই যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৮৮৪ জনের। যা এখনও পর্যন্ত এক দিনে সবচেয়ে বেশি। গোটা দেশে মৃত্যু পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে।
নিউইয়র্কই এখন মহামারির ভরকেন্দ্র। নিউইয়র্ক প্রশাসন জানিয়েছে, সাধারণ মানুষ তো বটেই, ভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে রাজ্যের পুলিশ এবং আপৎকালীন পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের মধ্যেও।
নিউইয়র্ক প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শুধুমাত্র পুলিশেই ১৬ শতাংশ কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে এক হাজার কর্মীর শরীরে করোনা ভাইরাস মিলেছে। দমকলের দুই হাজার ৮০০ কর্মীকে অসুস্থতার কারণে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের ২৫ শতাংশ অসুস্থ। তাদের অনেকের শরীরেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
এই অসুস্থ হয়ে পড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই লাগাতার সমাজ মাধ্যমে তাদের ক্ষোভ জানিয়ে যাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ, চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজার ইত্যাদি প্রয়োজনের চেয়ে অনেক কম। ফলে বাধ্য হয়েই তাদের ঝুকি নিতে হচ্ছে।
এরই মধ্যে বুধবার বিল গেটসের অনুদানে চলা একটি সংগঠন যুক্তরাষ্ট্রে সম্ভাব্য মৃত্যুর একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে ৯৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে। যার মধ্যে কেবলমাত্র নিউইয়র্কেই মারা যেতে পারেন ১৬ হাজার লোক। তবে হোয়াইট হাউসের তথ্য পরিসংখ্যান আরও বেশি। মার্কিন প্রশাসনের বক্তব্য, সামাজিক দূরত্বের বিধি না মানলে যুক্তরাষ্ট্রে সব মিলিয়ে এক লাখ থেকে দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
বুধবার যুক্তরাজ্যও সব চেয়ে বেশি করোনা মৃত্যু দেখলো। এক দিনে সেখানে মৃত্যু হয়েছে ৫৬৩ জনের। সব মিলিয়ে সেখানে এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন দুই হাজার ৩৫২ জন। আর স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ৮৬৪ জন। যার জেরে সেখানে মোট মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় দশ হাজারে দাঁড়িয়েছে।