স্পেনে আট বাংলাদেশি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত, তিনজন সিলেটি

15

কাজিরবাজার ডেস্ক :
স্পেনে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আট বাংলাদেশি আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে ওই বাংলাদেশিরা করোনায় আক্রান্ত হন।
আটজনের মধ্যে তিনজন সিলেটের, ঢাকার দুইজন, যশোরের একজন। এবং অপরজনের বাড়ি জানা যায় নি। আটজনই বর্তমানে হাসপাতালে আছেন। এদিকে ঢাকার ২ জন স্বামী -স্ত্রীকে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে। এই প্রথম এক সাথে দেশটিতে মোট আটজন বাংলদেশি এই ভাইরাসের শিকার হলেন। সেখানেই তাঁরা চিকিৎসাধীন।
বাংলাদেশী মানবাধিকার সংস্থা ভালিয়েন্তে বাংলার সভাপতি মোঃ ফজলে এলাহী এ কথা জানিয়েছে। তিনি জানান, আক্রান্তদের ৩ জনের বাড়ি সিলেটে একজনের বয়স ৪৫, আরেকজনের ৪৩ এবং ওপরজন মহিলা ৩৫বয়সী। তারা দেশটির রাজধানী মাদ্রিদের বাঙালি অধ্যুষিত লাভাপিয়েসে থাকেন।
তবে করোনায় আক্রান্ত অপর দুইজন সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী, তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদেরকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।আক্রান্ত স্বামীর বয়স ৩৭, স্ত্রীর ২৬। তাদের দুইমাসের একটি বাচ্চাকে হ্যাসপাতাল হেফাজতে রাখা হয়েছে। তারা দেশটির রাজধানী মাদ্রিদের অদূরে কারাবানচলে থাকেন।
তবে করোনায় আক্রান্ত অপর দুইজনই তরুণ। একজন ২৫বছর বয়সী তরুন, অপরজন ২৬ বছর বয়সী তরুন। ২৫ বছর বয়সী তরুনের বাড়ী ব্রাহ্মণবাড়িয়া। অপরজন ২৬ বছর বয়সী তরুনের বাড়ি জানা যায়নি। তারা দুইজনই রাজধানী মাদ্রিদে দীর্ঘদিন থেকে বসবাসরত।
দেশটির রাজধানী মাদ্রিদসহ এরই মধ্যে কারোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে রাজধানী মাদ্রিদ,বার্সেলোনাসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ অফিস আদালত বন্ধ করা হয়েছে। এমনকি বাঙালি অধ্যুষিত লাভাপিয়েসের বাঙালি পরিচালনাধীন বায়তুল মোকাররম বাংলাদেশ মসজিদে আজকের জুম্মার নামাজ ও সাময়িক ভাবে বন্ধ করা হয়েছে। যানবাহনে এবং চলাফেরা নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এমন পরিস্তিতে আতঙ্কিত স্প্যানিশ নাগরিকসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এদিকে করোনা ভাইরাসে স্পেনে একরাতে নতুন করে আরও ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে এখনো করোনা সংক্রমিত কোভিড-১৯ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ১২০ জন। এছাড়া নতুন করে আরও অনেক মানুষ আক্রান্ত হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ২০৯। এমন অবস্থায় জরুরি অবস্থার তিন ধাপের প্রথমটি জারি হয়েছে।
স্পেনের টেলিভিশনের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটিতে আশঙ্কাজনক হারে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জরুরি অবস্থার তিন ধাপের প্রথমটি অর্থাৎ ‘জরুরি রাষ্ট্রীয় সতর্কতা’ (স্টেট অব এলার্ট) জারি করেছে দেশটির সরকার।
স্টেট অব এলার্ট জারি থাকবে ১৫ দিন। এছাড়া এই জরুরি সতর্কতা জারির কারণে দেশটির সরকার দেশব্যাপী বিস্তৃতি নানা পদক্ষেপ নিতে পারবে এবং প্রয়োজনে মানুষকে নিজের বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়াও হতে পারে।
স্প্যানিশ গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে রাজধানী মাদ্রিদে সকল ধরনের রেস্তোরাঁ, পানশালা এবং দোকান বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। শুধু সুপারমাকের্ট এবং ওষুধের দোকানগুলোই খোলা থাকবে। টিভিই নামের একটি গণমাধ্যম বলছে, এটা শুরু হতে পারে আগামীকাল।
তবে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভা এ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। বিশ্বের মধ্যে পঞ্চম সর্বোচ্চ করোনাভাইরাস আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। ইউরোপে ইতালির পর দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়। দেশটিতে করোনাভাইরাসের বিস্তার শুরু হয়েছিল মাদ্রিদ এবং বাস্ক কাউন্টি থেকে।