কাজিরবাজার ডেস্ক :
এটিএম বুথে এন্টি স্কিমিং ডিভাইস বসানোর বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানছে না অধিকাংশ ব্যাংক। এ জন্য দীর্ঘ চার বছরেও এটিএম বুথ থেকে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নেয়া থেমে নেই। এটিএম বুথে এন্টি স্কিমিং ডিভাইস না থাকায় দেশী-বিদেশী চক্র বিভিন্ন ব্যাংকের বুথ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যাদের অধিকাংশই থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এ জন্য গত এক বছরে শুধু একটি ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে এক নারী ১৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাকে ধরিয়ে দিতে পুলিশ একলাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। তারপরও এখন পর্যন্ত সেই নারী আটক হয়নি।
এভাবে গত প্রায় চার বছরে দেশের অন্তত এক হাজার এটিএম বুথ থেকে দুই হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রগুলো। যদিও বাস্তবে হাতিয়ে নেয়া টাকার পরিমাণ আরও বেশি। বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশে থাকা আন্তর্জাতিক এটিএম বুথ জালিয়াত চক্রের সন্ধান করছে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে এটিএম বুথ জালিয়াতিতে গ্রেফতার হওয়া দেশী-বিদেশী সদস্যদের পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করে যাচ্ছে সিআইডি ও আন্তর্জাতিক এটিএম বুথ মনিটরিং টিমের সদস্য হিসেবে থাকা বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের তথ্য মোতাবেক, প্রযুক্তিনির্ভর জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশে এটিএম বুথ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনাটি প্রথম ধরা পড়ে ২০১৬ সালে। ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ইস্টার্ন ব্যাংক বনানী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলার অভিযোগে বলা হয়, কমপক্ষে ২১ জন গ্রাহকের এ্যাকাউন্ট থেকে এটিএম কার্ড ক্লোন করে অন্তত ১০ লাখ টাকা তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমন ঘটনার দুই দিন পর ১৪ ফেব্রুয়ারি ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল) একই থানায় একই ধরনের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, প্রতারক চক্র নিজেদের ব্যাংকের লোক পরিচয়ে ব্যাংকটির বিভিন্ন এটিএম বুথে স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে গ্রাহকের এটিএম কার্ডের তথ্য চুরি করে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এছাড়া পল্লবী থানায় সিটি ব্যাংকের তরফ থেকে এমন অভিযোগে আরেকটি মামলা দায়ের হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ইউসিবিএল ছাড়াও ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড ও সিটি ব্যাংকের ছয়টি বুথে স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে তথ্য চুরি করে একইভাবে কার্ড বানিয়ে প্রায় ২১ লাখ টাকা তুলে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। স্কিমিং ডিভাইসটি অন্তত ১২শ’ এটিএম কার্ডের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এরমধ্যে ৪০টি কার্ড তৈরি করে টাকা তুলে নিয়েছে চক্রটি। বাকি ১১শ’৬০টি কার্ড বানিয়ে টাকা তুলে নেয়ার প্রস্তুতি চলছিল।
মামলাগুলোর তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার ডিআইজি মনিরুল ইসলাম জানান, তদন্তের ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি জার্মানির নাগরিক পিওটর স্কেজেফান মাজুরেক (৫০), সিটি ব্যাংকের তিন কর্মকর্তা মোকসেদ আলী মাকসুদ (৪৫), রেজাউল করিম শাহীন (৪০) ও রেফাত আহমেদ রনিকে (৪২) গ্রেফতার করা হয়।
তাদের দেয়া তথ্যমতে, চক্রটি শুধু বাংলাদেশেই সক্রিয় নয়। তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও সক্রিয়। তারা শুধু ২০১৬ সালেই বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ১৬শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
যার মধ্যে ২০১৬ সালেই চক্রটি বাংলাদেশ থেকে অন্তত একশ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে দাবি করেছে। পুরো জালিয়াত চক্রটির সঙ্গে লন্ডনপ্রবাসী পলাতক দুই বাংলাদেশী ছাড়াও চার বিদেশী জড়িত। পলাতকদের গ্রেফতারে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে। পলাতক বিদেশীরা রোমানিয়া, বুলগেরিয়া ও ইউক্রেনের নাগরিক। আর গ্রেফতারকৃত বিদেশী পিওটর বিশ্বের ৪টি দেশে মোস্টওয়ান্টেড হিসেবে তালিকাভুক্ত। পিওটর মূলত জার্মানির নাগরিক। সে পোল্যান্ডের নাগরিক পরিচয়ে প্রতারণার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিল।
মনিরুল ইসলাম বলছেন, দেশের প্রায় সব ব্যাংকের এটিএম সেবা চালু আছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিটি ব্যাংককে যার যার এটিএম বুথে স্ব স্ব ব্যবস্থাপনায় এবং প্রযুক্তিতে এন্টি স্কিমিং ডিভাইস বসানোর লিখিত নির্দেশ দিয়েছে। তারপরেও অধিকাংশ এটিএম বুথে এন্টি স্কিমিং ডিভাইস নেই। এই সুযোগটিকেই কাজে লাগায় দেশী-বিদেশী চক্র। তারা কার্ড প্রবেশ করানোর জায়গায় এবং এটিএম বুথের মনিটরের উপরের দিকে সূক্ষ্ম ক্যামেরা বসিয়ে রাখে। সেই ক্যামেরায় ভিডিও হয় গ্রাহকের গোপন পিন নম্বর। সেই পিন নম্বর দিয়ে ক্লোন এটিএম কার্ড তৈরি করে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নেয়।
এছাড়া ২০১৭ সালের ১০ মার্চ র্যাব-১০ এর হাতে আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ১১ জন গ্রেফতার করা হয়। চক্রের হোতা সোহেল। দুবাই থাকার সময় এরিন লিমো নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের মাধ্যমে এটিএম কার্ড জালিয়াতির কৌশল শিখে সে। সেই বিদেশীই তাকে এটিএম কার্ড জালিয়াতির বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়। এরিক লিমো ১২ বছর ধরে কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত। দুবাইতে ৫ বছর সোহেল এরিক লিমোর সঙ্গে কার্ড জালিয়াতি করে কোটি কোটি হাতিয়ে নেয়। সোহেল ও পিটার নামের এক বিদেশী ২০১৭ সালে বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে ৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে পিটার গ্রেফতার হয়। চক্রটির সঙ্গে আমেরিকা, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী আন্তর্জাতিক এটিএম কার্ড জালিয়াতি চক্রের যোগাযোগ আছে।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের এপ্রিলে হাতঘড়ির বিশেষ ডিভাইসে এটিএম কার্ডের তথ্য চুরি করে সেই তথ্য দিয়ে ক্লোন এটিএম কার্ড বানিয়ে টাকা তুলে নেয়ার সঙ্গে জড়িত শরিফুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বিভিন্ন ব্যাংকের ১৪ শ’ ক্লোন এটিএম কার্ড, একটি ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ কার্ড রিডার ও রাইটার, তিনটি পজ মেশিন, তথ্য চুরির কাজে ব্যবহৃত ডিজিটাল হাতঘড়ি, দুটি মিনি কার্ড রিডার ডিভাইস, ১৪টি পাসপোর্ট, আটটি মোবাইল ফোনসেট, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের একটি নেক্সাস ক্রেডিট কার্ড, তিনটি জাতীয় পরিচয়পত্র, একটি পরচুলাসহ নানা সরঞ্জাম।
শরিফুল শুধু ২০১৮ সালের শুরুতেই ব্র্যাক, সিটি, ইবিএল, ইউসিবিএল ও ব্যাংক এশিয়ার এটিএম কার্ড জালিয়াতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। শরিফুল বিভিন্ন চেইন শপে পজ মেশিন দিত। সেই মেশিনে বিশেষ ডিভাইস বসিয়ে দিত। গ্রাহকরা পজ মেশিনে ব্যাংকের এটিএম কার্ড পাঞ্চ করলে কার্ডের তথ্য থেকে যেত সেই ডিভাইসে। এভাবে গ্রাহকের এটিএম কার্ডের তথ্য চুরি করে ক্লোন এটিএম কার্ড তৈরি করত। আর সেই কার্ড দিয়ে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নিত।
শরিফুল ইসলাম ডিপার্টমেন্টাল শপ স্বপ্নের বনানী শাখায় কাজ করত। সুবিধার জন্য বাম বা ডান হাতে বিশেষ ডিভাইসযুক্ত হাতঘড়িটি পরত। গ্রাহক যখন তার এটিএম কার্ডটি পজ মেশিনে দিত, তখন যে কোন কাজের উছিলায় তার হাতঘড়িটি পজ মেশিনের সঙ্গে লাগাত। লাগানোর সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকের এটিএম কার্ডের যাবতীয় তথ্য ব্লু টুথের মাধ্যমে হাতঘড়িতে থাকা মিনি কার্ড রিডার ও স্ক্যানারে জমা হতো। পরে বাসায় গিয়ে তার ল্যাপটপ এবং ডিভাইসের মাধ্যমে কাস্টমারের তথ্যগুলো দিয়ে ভার্জিন কার্ড বা খালি কার্ডে স্থাপন করে ক্লোন এটিএম কার্ড বানাত। পরে সুবিধাজনক এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নিত।
বুথে টাকা তোলার সময় সিসি ক্যামেরায় যাতে তার আসল চেহারা না ওঠে এজন্য সে কালো বিশেষ ধরনের সানগ্লাস ও পরচুলা ব্যবহার করত। অন্য চেহারা ধারণ করে এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে নিত। স্বপ্ন নামের সুপার শপটিতে চাকরি করলেও তার মূল পেশা ছিল ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি করা। জালিয়াতির মাধ্যমে সে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। জালিয়াতির টাকায় বিলাসী জীবনযাপন করত। একটি সুপার শপের কর্মচারী হয়েও সে ব্যক্তিগত চলাচলের জন্য টয়োটা এলিয়ন মডেলের গাড়ি ব্যবহার করত। তার ব্যাংক এ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে এ পর্যন্ত কয়েক কোটি টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে।
শরিফুল রাশিয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সময় তার রাশিয়ান রুমমেট ইভানোভিচের কাছ থেকে ক্রেডিট কার্ড প্রতারণার কৌশল শিখে। দেশে আসার পরপরই সে কার্ড জালিয়াতি শুরু করে। ২০১৩ সালে এই সংক্রান্তে দুটি মামলা হয়। ওই মামলা দুইটিতে শরিফুলের ১৮ মাসের সাজা হয়েছিল। তখন ঘটনাটি ততটা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেনি। ২০১৬ সালে এটিএম কার্ড জালিয়াতির বিষয়টি ব্যাপক হারে প্রকাশ্যে চলে আসে। তার আগেই ২০১৪ সালের শেষ দিকে জামিনে বেরিয়ে সে আবারও প্রতারণার কাজে নেমে পড়ে।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১ জুন ডাচ-বাংলা ব্যাংকের খিলগাঁওয়ের এটিএম বুথ থেকে কার্ড জালিয়াতি করে তিন লাখ টাকা উত্তোলনের ঘটনায় ইউক্রেনের সাত নাগরিক দেনিস ভিতোমস্কি (২০), নাজারি ভজনোক (১৯), ভালেনতিন সোকোলোভস্কি (৩৭), সের্গেই উইক্রাইনেৎস (৩৩), আলেগ শেভচুক (৪৬) ও ভালোদিমির ত্রিশেনস্কিকে (৩৭) ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগটি বলছে, এটিএম বুথ ও এটিএম কার্ডের মাধ্যমে জালিয়াতির ঘটনা শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই হচ্ছে। এমন অপরাধের আদ্যোপান্ত জানতে একটি বিশেষ আন্তর্জাতিক টিম গঠিত হয়েছে। যেসব দেশে এমন প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে, সেইসব দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সমন্বয়ে কমিটি গঠিত হয়েছে। এট্ি একটি আন্তর্জাতিক প্রতারণা। চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন দেশে নিজের নাম ঠিকানা ভুল দিয়ে প্রবেশ করে এমন অপরাধমূলক কর্মকা- চালাচ্ছে।
এ জন্য বাংলাদেশে এটিএম বুথ ও এটিএম কার্ড জালিয়াতির দায়ে গ্রেফতার হওয়া বিদেশীদের পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। যেসব দেশের নাগরিকরা গ্রেফতার হয়েছে, সেসব দেশকে ইতোমধ্যেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অবহিত করা হয়েছে। প্রয়োজনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় আন্তর্জাতিক টিম বা ওইসব দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও উপস্থিত থাকার সুযোগ রাখা হয়েছে। বিশ্বের কতগুলো দেশে কতটি সিন্ডিকেট এমন প্রতারণার সঙ্গে জড়িত তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে আদানপ্রদান করা হচ্ছে। শুধু এটিএম কার্ড নয়, বড় বড় চেইন শপে থাকা পজ মেশিনের মাধ্যমেও এমন প্রতারণার ঘটনা ঘটছে। এত কিছুর পরেও এটিএম কার্ড জালিয়াতি থেমে নেই।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ এটিএম কার্ড জালিয়াতি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া এক নারীকে ধরিয়ে দিতে এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে। ওই নারী প্রতারক সাউথ ইস্ট ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে ইতোমধ্যেই বিভিন্ন সময় ১৩ লাখ টাকা তুলে নিয়েছে। এটিএম বুথে থাকা সিসি ক্যামেরায় তার ছবি পাওয়া গেছে। সেই ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, সাইফুল ইসলাম নামের এক দুবাইপ্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকের সাউথ ইস্ট ব্যাংকের ডেমরার সারুলিয়া ও ডেমরা শাখার এ্যাকাউন্টে থাকা টাকার মধ্যে ১৩ লাখ টাকা বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। ২০১৯ সালের ৭ জুলাই থেকে গত বছরের ১৮ আগস্ট পর্যন্ত সে টাকাগুলো ব্যাংকটির বিভিন্ন এটিএম বুথ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে গত বছরের ৬ নবেম্বর রমনা থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, ওই নারীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি ওই নারী যাতে আর কোন ব্যাংকের এটিএম কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে বুথ থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে না পারে, এজন্য তার ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। এটিএম বুথগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মোতাবেক এন্টি স্কিমিং ডিভাইস লাগানোর কথা। যেসব ব্যাংক তাদের এটিএম বুথে এন্টি স্কিমিং ডিভাইস লাগায়নি, সেসব বুথ থেকে টাকা চুরির ঝুঁকি রয়েছে। এমনকি ক্লোন করা এটিএম কার্ড দিয়ে ওইসব এটিএম বুথ থেকেই টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনাগুলো ঘটছে। ঢাকা মহানগর পুলিশ, অন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদারকি করছে। যাতে ভবিষ্যতে আর এ ধরনের ঘটনা না ঘটে।