আবার মিল মালিক ও সংশ্লিষ্ট সিন্ডিকেটের কারসাজি শুরু হয়েছে। চালের দাম বেড়েছে। মোকামে দাম বাড়ানোর কারণে ভোক্তা পর্যায়েও প্রতি কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেশি দামে। মোটা চালের দাম কেজিতে দুই-এক টাকা বেড়েছে, তবে সরু চালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারেও চালের দাম কেজিতে তিন থেকে সাত টাকা বেড়েছে। ধানের দাম বাড়তি, চাহিদার তুলনায় জোগান কম এমন সব কারণ দেখিয়ে বাড়ানো হয়েছে চালের দাম। বাজারের ওপর এবং বাজার কুশীলবদের ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা যে মোটেও কার্যকর নয়, তা বোধগম্য।
আমন ধানের মৌসুমে দুই দফায় চালের দাম বাড়িয়েছেন মিল মালিকরা। মূলত ধান সংকটের কথা বলে বস্তাপ্রতি চালের দাম ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী এক মাসের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে সরু চালের (মিনিকেটসহ) দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এক মাস আগে এসব চালের দাম ছিল ৪৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি; এ পর্যন্ত বেড়ে দাম দাঁড়ায় ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। ঢাকার ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী বাজারভেদে মিনিকেট চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা বেড়েছে। নাজিরশাইল, লতা, স্বর্ণা ও ইরি চালের দাম কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা বেড়েছে। পাইকারিতে মোটা চালের দাম ২৭ থেকে ২৮ টাকা, খুচরা বাজারে এখন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিলগেটে চালের দাম বেশি, তাই বাড়তি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে তাঁদের। মিল মালিকরা বলছেন, ধানের সরবরাহ কম, তাই দাম বেশি। ধানের দাম বাড়ায় চালের দামও বেড়েছে। নিত্যপণ্যের বাজারে অদ্ভুত এক পরিস্থিতি চলছে। ধান-চালের বাজার তার ব্যতিক্রম নয়। দামের ওঠা-নামায় কোনো বিধি কাজ করে না। একদিকে কৃষক ধানের যৌক্তিক মূল্য পায় না, অন্যদিকে মিল মালিকরা চালের দাম বাড়ান। কৃষক ও ভোক্তার অনুকূলে কোনো ব্যবস্থা কার্যকর নেই। বাজারে নৈরাজ্য বিরাজমান। এটি সুশাসনের, জনস্বার্থ রক্ষার লক্ষণ নয়। দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে বাজারে সরকারের নজর রাখা উচিত।