সিকৃবিতে প্রথমবারের মতো কৃষি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধন ॥ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কৃষির ভূমিকা অপরিসীম

12
কৃষি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ক্রেষ্ট তুলে দিচ্ছেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. এম. আবুল কাশেম।

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটে কৃষি সম্প্রসারণ সম্পর্কিত প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার “টেকসই কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন” শীর্ষক আন্তর্জাতিক সমে¥লনটি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উদ্বোধন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর জানায়, বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ সোসাইটি ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার ও আজ শুক্রবার ২দিন ব্যাপি এ সম্মেলনটি চলবে। বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ সোসাইটির সভাপতি প্রফেসর ড. এম জুলফিকার রহমান এর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. এম আসাদুজ্জামান সরকারের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ মতিয়ার রহমান হাওলাদার। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হাজী মোঃ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. আবুল কাশেম, বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিমসন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুল মূয়ীদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভারতের বিসিকেভি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মানাস মোহন অধিকারী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহ-আহ্বায়ক সিকৃবির কৃষি অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. মোঃ আবুল কাশেম। প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তৃতায় প্রফেসর ড. মতিয়ার রহমান হাওলাদার বলেন, আমাদের দেশের বর্ধনশীল অর্থনৈতিক উন্নয়নে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। বর্তমান সরকার কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করে যাচ্ছে। আমাদের দেশের উন্নয়ন করতে হলে, সমাজ ও গ্রামীণ জনপদের উন্নয়নের বিকল্প নেই।
বর্তমানে বাংলাদেশে ৩৬ মিলিয়ন টন ধান, ৪ মিলিয়ন টন ভূট্টা, ১.৬ মিলিয়ন টন সবজি, ১১ মিলিয়ন টন আলু, ৩.৫ মিলিয়ন টন মশলা, ৫ মিলিয়ন টন ফল, ৪.৩ মিলিয়ন টন মৎস্য উৎপাদিত হচ্ছে বলে সম্মেলনে তথ্য প্রকাশ করা হয়। দেশে ৫৫ মিলিয়ন গবাদি প্রাণী ও ৩৪০ মিলিয়ন পোল্ট্রি রয়েছে। এ খাত থেকে ৯.৫ মিলিয়ন টন দুধ, ৭.৩ মিলিয়ন টন মাংস এবং ১৫.৬ বিলিয়ন ডিম উৎপাদিত হচ্ছে বলে তথ্য উপস্থাপিত হয়। এছাড়া কৃষি খাত থেকে গৃহস্থালি জ্বালানির ২৫ ভাগ সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানান গবেষকবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্যায়ে ‘টেকনিক্যাল সেশন’ শুরু হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. ক্যারেন এ ভাইন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর জুন কিম। ১৩টি টেকনিক্যাল সেশনে শতাধিক বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি গবেষকবৃন্দ। এছাড়াও আলাদা স্টলে অর্ধশতাধিক পোস্টার প্রেজেন্টেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে কৃষি সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য কৃষিবিদ তাহা জোবায়ের, কৃষিবিদ মোঃ শাহাদাত হোসাইন, কৃষিবিদ এম ইবাদ আলী এবং মাহফুজা খানমকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা ও স্বাগতিক দেশ বাংলাদেশসহ প্রায় চার শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।