কাজিরবাজার ডেস্ক :
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং গবেষকদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আচার্য মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দেশের প্রতি দায়িত্ববোধে জাগ্রত হয়ে শিক্ষক-গবেষকেরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত জ্ঞানের নব নব দিগন্ত উন্মোচন করবেন। এক্ষেত্রে জ্ঞান আহরণ, লালন, অনুশীলন ও বিতরণে তাদের অধিক তৎপর, আন্তরিক ও অর্থবহ ভূমিকা পালন করতে হবে।’
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বুধবার (২২ জানুয়ারি) এক কর্মশালার সমাপনী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ ও শিক্ষক-গবেষকদের প্রতি তিনি এ আহ্বান জানান।
‘ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন অ্যান্ড প্লানিং ল্যাব’ শীর্ষক ছয় দিনব্যাপী এ কর্মশালার আয়োজন করেছে।
সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, শিক্ষার গুণগত মান সংরক্ষণ ও উন্নয়নে শিক্ষক ও গবেষকদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। একজন শিক্ষার্থীর কাছে তার শিক্ষকই আদর্শ। সেই আদর্শ সমুন্নত রেখে দেশের ও মানুষের কল্যাণে আপনাদের গবেষণা কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
আসন্ন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ প্রযুক্তিবিদ তৈরির ওপর জোর দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য আবদুল হামিদ বলেন, ‘দেশীয় প্রযুক্তিবিদদের উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও প্রযুক্তিবিদদের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে হবে। আমি আশা করি সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগসহ দেশের প্রকৌশল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করবে।’
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ই-গভর্নেন্স কোর্স চালুসহ ইন্টিগ্রেটেড ইউনিভার্সিটি ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ইউজিসিসহ সব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
রাষ্ট্রপতি জানান, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রায় ২ হাজার ৭৪টি ডিজিটাল সেবা শনাক্ত এবং এগুলোর বাস্তবায়নে প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ২৩ টি মন্ত্রণালয়ের ৭২৩ টি সেবাকে ডিজিটাল সার্ভিসের ডিজাইন এবং পরিকল্পনা করে ২০২১ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ডিজিটালাইজেশনে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৫৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিফর্মড ইউনিভার্সিটি ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার এবং ইন্টিগ্রেটেড ইউনিভার্সিটি ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম তৈরির ‘ডিজাইন এবং পরিকল্পনা ল্যাব’ সম্পন্ন হওয়ায় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ডিজিটালাইজড হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে গেলো। এ সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষক ও দাপ্তরিক কর্মকর্তাসহ অভিভাবকরা যেকোনো জায়গা থেকে এর সুফল ভোগ করতে পারবেন। এতে অর্থ ও সময়ের সাশ্রয় হবে।
‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইন্টিগ্রেটেড ইউনিভার্সিটি ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট প্ল্যাটফর্ম চালু হলে শিক্ষার্থীরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গতিশীলতা আসবে। সৃষ্টি হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির পরিবেশ।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের জনবিভাগের সচিব সম্পদ বড়ুয়া এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব জনাব মো. মাহবুব হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন।