কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বাজার সমূহে পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে মাছের মেলা বসেছে। বাজার সমূহে মাছ ক্রয় করতে ও দেখতে মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সনাতনী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পৌষ সংক্রান্তি উৎসব। এ উৎসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে তৈরী হবে নানা ধরনের পিঠা পুলি ও সুস্বাদু খাবার। তার একটি বড় অংশ হচ্ছে বাজার থেকে বড় আকারের মাছ কিনে খাবার তৈরী করা। তাই পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর, ভানুগাছ বাজার, মুন্সীবাজার, আদমপুর বাজার ও শহীদ নগর বাজারে বসেছে বিরাট মাছের মেলা। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিভিন্ন জাতের বড় আকারের মাছ সাজিয়ে বসেন মাছ বিক্রেতারা। এ উপজেলায় সবচেয়ে বড় মাছের হাট বসেছে ঐতিহ্যবাহী মুন্সীবাজারে।
পৌষ পার্বন উপলক্ষে বড় আকর্ষণ থাকে বাজার থেকে পছন্দ মত বড় আকারের মাছ কিনে খাবার তৈরী করা। মঙ্গলবার দুপুরে মুন্সীবাজার ও শমশেরনগর বাজারে মাছের মেলা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি মাছের দোকানে সামান্য ছোট ও মাঝারি আকারের মাছ সাজিয়ে রাখা হলেও সংগ্রহে রাখা হয়েছে নানা জাতের বড় আকারের মাছ। চিতল, রুই, কাতল, মৃগেল, পাঙ্গাস, আইড়, ব্রিগেট, বাঘ মাছ, রুপ চাঁদা, ঘাস কার্পসহ নানা জাতের সামুদ্রিক মাছ। কিছু কিছু দুর্লব মাছ যেগুলো সহজে হাট বাজারে পাওয়া যায় না এমন মাছও সাজিয়ে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। বিক্রতারাও বেশ চড়া দাম হাকালেও শেষ পর্যন্ত কিছুটা সহনীয় পর্যায়ের দামে মাছ বিক্রি করতে হচ্ছে। ভানুগাছ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী কামরান মিয়া ১৫ কেজি ওজনের একটি বাঘ মাছের দাম নির্ধারণ করেন বিক্রয়ের জন্য দাম হাঁকছেন ২০ হাজার টাকা। ১০ কেজি ওজনের একটি বোয়াল মাছের দাম ছিল ১৫ হাজার টাকা। ১০ কেজি ওজনের একটি রুই মাছের দাম ছিল ১২ হাজার টাকা। ক্রেতা সঞ্জয় দাম গুপ্ত, সুজিত দেব নাথ ও সমরজিৎ বর্মা জানান, এ উৎসবে বাজারে নানা জাতের বড় আকারের মাছ উঠে। এটি দেখারও একটি বিষয় থাকে। দাম বেশী হলেও পরে দরাদরি করে কিনে নিতে হয়।
মাছ বিক্রতা মানিক মিয়া, মারুফুর রহমান মুকুল, আমির হোসেন বলেন, দাম বড় কথা নয়। মূলত ক্রেতাদের আকর্ষিত করে এমন বড় আকারের মাছ সরবরাহ করা হয় মাছ মেলায়। যদিও বেশ চড়া দাম বলা হলেও ক্রেতারা দরাদরি করে পড়ে সহনীয় পর্যায়ে হলে কিনে নিচ্ছেন। আর পরিবহন ব্যয় ধরে সামান্য লাভ হাতে রেখেই অবশেষে দাম কমিয়ে মাছ বিক্রি করছেন তারা। মাছের আড়ৎদার আব্দুল মিয়া বলেন, আগের চেয়ে এখন দেশীয় মাছের সরবরাহ অনেক কমে গেছে। সাধারনত বাজারে এত বড় আকারের মাছ উঠে না। পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাওর, বাওর, বিল ও বড় নদী থেকে ধরে আনা বড় আকারের মাছ এ বিশেষ দিনের জন্য সরবরাহ করতে হয়। তাই প্রতি বছরের ন্যায় এবারও তারা বাজারের নানা জাতের বড় আকারের মাছ সরবরাহ করেছেন। মাছের মেলা গভীর রাত এমনকি পরদিন সকাল পর্যন্ত বিক্রয় চলবে বলে আড়ৎদাররা জানান।