যুদ্ধাপরাধী সৈয়দ কায়সারের মৃত্যুদন্ডাদেশ বহাল

8

কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হবিগঞ্জে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত জাতীয় পার্টির সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী ও কায়সার বাহিনীর প্রধান সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সারের মৃত্যুদন্ডের আদেশ বহাল রখেছে আপীল বিভাগ। ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের অভিযোগে দেয়া মৃত্যুদ- আপীল বিভাগে সর্বসম্মতভাবে বহাল রাখা হয়েছে।দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে ধর্ষণে সহযোগিতায় মৃত্যুুদ- সাজার এটাই প্রথম নজির। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্য বিশিষ্ট আপীল বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন। এই আপীল বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হলেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা এবং বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে আসা এটি নবম মামলার রায়।
রায় ঘোষণার পর এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, এই রায়ে আমাদের দেশে ধর্ষণে সহযোগিতা করার দায়ে প্রথম কোন আসামিকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হল। ওই অভিযোগের যে ভিকটিম, সে নিজে কোর্টে এসে সাক্ষ্য দিয়েছে এবং তার মেয়েও আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বলেছে দুর্দশার কথা। এই ১২ নম্বর অভিযোগটিতে চার বিচারপতিই একমত হয়ে মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছেন। আর ৫ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন। আর আসামিপক্ষের আইনজীবী এসএম শাজাহান বলেন, এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে তা দেখে আমরা রিভিউ আবেদন করব।
এদিকে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে কুখ্যাত রাজাকার কমান্ডার ও প্রাক্তন কৃষি প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোঃ কায়সারের মৃত্যুদন্ডাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগেও বহাল থাকায় হবিগঞ্জের সর্বত্র বয়ে যাচ্ছে আনন্দের বন্যা। মঙ্গলবার সকালে সুপ্রীমকোর্ট আপীল বিভাগের বিচারপতিরা ওই রায় বহাল রাখার ঘোষণা দিলে মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডসহ সাধারণ মানুষ হবিগঞ্জের রাজপথে নেমে উল্লাস করে। এ সময় তারা যুদ্ধাপরাধী সৈয়দ কায়সারের ফাঁসি দ্রুত কার্যকরের দাবিতে নানা স্লোগান শুধু দেয়নি বরং মিষ্টি বিতরণ উৎসবেও মাতিয়ে তুলে শহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স চত্বরসহ একাধিক এলাকা। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের নেতা ব্যাংকার জয়নাল আবেদীন রাসেল, পংকজ ও মুক্তিযোদ্ধা সফিকুর রহমানসহ অনেকেই রাজাকার কায়সারের বিরুদ্ধে দেয়া এই রায় দ্রুত কার্যকরের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি জোরালো দাবি জানানোর পাশাপাশি একই অপকর্মের তার পরিবারের কোন সদস্য বা অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাও দ্রুত উদঘাটন করে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচার কার্য সম্পাদন করার দাবি জানান তারা। সেই সঙ্গে ‘সেই রাজাকার সিরিজে ‘অসংখ্য খুন, ধর্ষণ ও লুটের হোতা হবিগঞ্জের নোয়াপাড়ার কায়সার এখন শিল্পপতি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের জন্য দৈনিক জনকণ্ঠের প্রশংসা করেন।