রাষ্ট্রপতির ভাষণ ও শিক্ষার্থীদের করুণীয়

11

সিলেটে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে খাদ্য ব্যবসায়ীদের অনৈতিক কাজের ব্যাপারে তীব্র নিন্দা জানান। যারা বাণিজ্যিক স্বার্থে খাদ্যপণ্যে ভেজাল প্রক্রিয়াজাতকরণ করে তারা দেশ ও জাতির শত্রু। খাদ্য মানুষের জীবনধারণের প্রধান মাধ্যমই শুধু নয়, স্বাস্থ্য সুরক্ষারও নিয়ামক শক্তি। সেই সজীব, সতেজ, টাটকা খাদ্যসামগ্রীকে যারা ভেজালে সয়লাব করছে তারা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধী। কারণ এমন সব ব্যবসায়ী চক্র মানুষের মূল্যবান জীবন নিয়ে মরণ নেশায় মেতে উঠেছে। বিশেষ করে ফরমালিন মেশানো বিষজাত খাদ্য মানুষের শরীরের পুষ্টি সাধনের বিপরীতে প্রাণঘাতী মরণ কামড় দিতেই ব্যস্ত থাকে। ফলে দেশে প্রতিনিয়ত ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আগে এই মরণব্যাধির একটি নির্দিষ্ট মাত্রা ছিল। আজ তা সমস্ত সীমাকে অতিক্রম করেছে। প্রাণ সংহারের মতো আশঙ্কা তৈরির পাশাপাশি সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে অসহায় ও নিরপরাধ জনগণ মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাচ্ছে। সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞানার্জনের সর্বোচ্চ পাদপীঠ বিবেচনায় রেখে রাষ্ট্রপতি অসহনীয় দুরবস্থা থেকে বের হওয়ার পরামর্শ দেন। পাশাপাশি সচেতন জনগোষ্ঠীকেও এ ব্যাপারে সাবধান ও সতর্ক থাকারও উদাত্ত আহ্বান জানান। দেশের বিশিষ্টজনদেরও অনেক দায়বদ্ধতা থাকে নিরাপদ খাদ্য কর্মসূচীকে প্রতিনিয়তই মানুষের কল্যাণে পরিচালিত করার। তিনি বলেন, বিষযুক্ত খাবার গ্রহণে যদি কোন মানুষ মারা যান সেটা হবে একেবারে খুন করার শামিল। সুতরাং এই অপরাধ অমার্জনীয়। শাক-সবজি, ফল-মূল, মাছ-মাংস, এমনকি মসলার গুঁড়াতেও অপচনশীল ফরমালিন মিশিয়ে খাদ্যপণ্য সুরক্ষার নামে অরক্ষিত করে দেয়া হয়, যা কোন মানুষকে সহজেই আক্রান্ত করতে সময় নেয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন, এখানে সম্মানিত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অনেক কিছু করণীয় আছে। রাষ্ট্রপতির ভাষণ আগামী প্রজন্মকে শুধু সম্মাননা দিয়েই নয়, উৎসাহ ও উদ্দীপনায় প্রাণিত করলেন।