বিশ্বনাথে বিয়ের একমাস পর প্রবাসী বাবার বিরুদ্ধে মামলা, স্বামী জেলে

9
বিশ্বনাথে গ্রেফতারকৃত স্বামী বদরুল আলম।

বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা :
কলেজে পড়–য়া মেয়েকে জোর করে বাল্য বিয়ে দেওযায় একমাস ১১৮ দিন পর বাবা ও স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সুমাইয়া আক্তার রানী (১৬) নামের এক কিশোরী। তিনি বিশ্বনাথ উপজেলার মাঝগাঁও গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী আব্দুল ওয়াজির বাবুলের মেয়ে ও সিলেটের মদমোহন কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। মামলার প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সুমাইয়ার স্বামী বদরুল আলমকে (২৯) গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া বদরুলও মঝগাঁওয়ের বাসিন্দা মুক্তার আলীর ছেলে। অন্যদিকে কিশোরী সুমাইয়াকেও তার স্বামী বদরুল আলমের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে জোর করে বাল্যবিয়ে ও ধর্ষণের অভিযোগ এনে নিজ পিতা আব্দুল ওয়াজির বাবুল (৫০) ও স্বামী বদরুল আলমসহ (২৯) ৪জনের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথ থানায় মামলা দায়ের করেন কিশোরী সুমাইয়া (মামলা নং ২৭)। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কিজিরপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে রাজিব আহমদ (৩০) ও সিলেটের হাওয়া পাড়ার বাসিন্দা মৃত করিম উল্লাহর ছেলে দিলোয়ার হোসেন (৪৪)।
জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর আগে ছাতকের পাইগাঁওয়ের বাসিন্দা সুমাইয়ার মা ফাতেমা বেগমকে (৩৮) দ্বিতীয় বিয়ে করেন প্রবাসী বাবুল। এরপর সুমাইয়ারও জন্ম হয় সেখানে। সুমাইয়ার ৬ বছর পূর্ন হওয়ার আগেই স্ত্রী ফাতেমার সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটান বাবুল। এরপর থেকে সুমাইয়াও তার নানা বাড়িতে থেকেই লেখা পড়া করছে। গত ৩১ অক্টোবর লন্ডন থেকে দেশে ফিরে কলেজে পড়–য়া মেয়ে সুমাইয়াকে সিলেটের হাওয়া পাড়াস্থ নিজ বাসা আর্কহোম টাওয়ারে নিয়ে যান বাবুল। সেখানে ১১দিন আটকে রেখে গত ১০ নভেম্বর সুমাইয়াকে বদরুল আলমের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দিয়ে ফের তিনি লন্ডনে চলে যান। বিয়ের একমাস ৯দিনের মাথায় সুমাইয়াকে উদ্ধার করে তার স্বামীকে গ্রেফতার করে হাজতে পাঠায় পুলিশ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মুসা ও মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসাই মিজানুর রহমান। তারা বলেন, কিশোরী মেয়ের প্রধান অভিযুক্ত বাবা লন্ডনে থাকায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলার ২য় আসামি তার স্বামীকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়েছে।