কানাইঘাটে ভাইয়ের হাতে ভাই খুন, আটক ৩

29
কানাইঘাটে ভাই ও ভাতিজাদের হাতে নিহত অলিউর রহমানের ছবি (ইনসেটে)। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয়দের সাথে কথা বলছেন কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি আব্দুল করিম।

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
কানাইঘাট উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আপন ভাই-ভাতিজার হাতে মারপিটের স্বীকার হয়ে মারা গেছেন অলিউর রহমান (৬৫)। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায়। অলিউর রহমান উপজেলার সদর ইউনিয়নের উমাগড় গ্রামে মৃত তোতা মিয়ার পুত্র। হত্যাকান্ডের পর কানাইঘাট থানা পুলিশ এলাকায় সাঁড়াশী অভিযান চালিয়ে নিহতের ছোটভাই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত খলিলুর রহমান (৬০), স্ত্রী রহিমা বেগম (৫০) ও তাঁর ছেলে মামুন আহমদ (২৭) কে আটক করেছে। এবং নিহতের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কানাইঘাট সার্কেলের এএসপি আব্দুল করিম, শিক্ষানবিশ এএসপি ওয়ালিউল ইসলাম রাজীব, থানার ওসি (তদন্ত) আনোয়ার জাহিদ। নিহত অলিউর রহমানের বাড়িতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে জানা যায়, ওলিউর রহমানের কোন ছেলে সন্তান নেই। তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে বিবাহিত ও মাসুদা নামের এক মেয়ে তালাকপ্রাপ্ত হিসেবে পিত্রালয়ে রয়েছে। দরিদ্র অলিউর রহমান কলা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। সম্পত্তি বলতে বাড়িতে ছয় শতক জমি রয়েছে। জমিটুকু জোর পূর্বক আত্মসাৎ করার জন্য দীর্ঘ দিন ধরে তাঁর আপন ছোটভাই খলিলুর রহমান চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন। অলিউর রহমানের ছেলে সন্তান না থাকায় তাঁর ছয় শতক জমি খলিলুর রহমান তাঁর নামে রেজিষ্ট্রারী করার জন্য গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে অলিউর রহমানকে সাব-রেজিষ্ট্রার অফিসে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে অলিউর রাজি না হওয়ায় সকাল ১০টা থেকে খলিলুর রহমান,তাঁর পুত্র মামুন ও মারুফ মিলে তাকে শারিরীকভাবে মারপিট ও টানা হেঁচড়া করলে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায় ওলিউর রহমানকে তার বসত ঘরে রেখে তারা দরজা তালা মেরে দেন। এবং তালাক প্রাপ্ত মেয়ে মাসুদাকে নানা হুমকি প্রদান করেন। এতে মাসুদা কৌশলে আশপাশের লোকজনকে বিষয়টি অবহিত করে। পরে আশপাশের লোকজন এসে ঘরের তালা খুলে অলিউর রহমানকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে মাসুদা বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কানাইঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল করিম জানিয়েছেন জমি সংক্রান্ত ঘটনায় আপন ভাই ও ভাতিজাদের মারধরে ওলিউর রহমান মারা গেছেন বলে আমরা ধারণা করছি। কারন তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহৃ পাওয়া গেছে এবং নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।