বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী আজ

10

কাজিরবাজার ডেস্ক :
বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের ৭২তম জন্মবার্ষিকী সোমবার। ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার হাজিপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্বের জন্য তিনি ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ খেতাবে ভূষিত হন। দিবসটি পালনে ভোলার আলীনগর ইউনিয়নে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল কলেজে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
মোস্তফা কামালের পিতার নাম হাবিলদার মোঃ হাবিবুর রহমান। তার মা মালেকা বেগম। ৫ ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তাঁর স্ত্রীর নাম পিয়ারা বেগম।
ছোটবেলা থেকেই স্কুলের পড়াশোনার চেয়ে ভাল লাগত সৈনিকদের কুচকাওয়াজ। নিজেও স্বপ্ন দেখতেন সৈনিক হওয়ার। ১৯৬৭ সালে কাউকে কিছু না বলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন তিনি। স্বাধীনতার দাবিতে দেশ যখন উত্তাল, তখন ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষণ শুনে আন্দোলিত হন তিনি। বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা যুদ্ধের ডাকে ঝাঁপিয়ে পড়েন বীরদর্পে।
১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল সকাল থেকেই আকাশে ছিল মেঘ। ১১টার দিকে শুরু হয় প্রচ- বৃষ্টি। একইসঙ্গে শত্রুর গোলাবর্ষণ। মুক্তিযোদ্ধারও পাল্টা গুলি ছুড়ে। শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। এমন সময় একজন মুক্তিযোদ্ধার বুকে গুলি বিঁধল। ততক্ষণে মোস্তফা কামাল সকল সহযোদ্ধাদের সরে যেতে বলেন। তিনি চালাতে লাগলেন স্টেনগান। মুক্তিযোদ্ধারা তাকে ছেড়ে যেতে না চাইলে তিনি আবারও সবাইকে নিরাপদে যেতে বলেন। অবিরাম গুলি চালাতে থাকেন তিনি। তার গোলাবর্ষণে শত্রুদের থমকে যেতে হয়েছে। মারা পড়েছে বেশ কয়েকজন পাক সৈন্য। ততক্ষণে দলের অন্য সদস্যরা সাবধানে পিছু হটেছেন। একসময় মোস্তফা কামালের গুলি শেষ হয়ে যায়। হঠাৎ করেই একটি গুলি এসে লাগে তার বুকে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শহীদী মৃত্যুবরণ করেন মোস্তফা কামাল। তার এমন বীরত্বের কারণে সহযোদ্ধাদের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার দররুইন গ্রামে তার শাহাদাত স্থানের পাশেই গ্রামের মানুষ জাতির এই শ্রেষ্ঠ বীরকে সমাহিত করেন। সেখানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সামরিক পদক বীরশ্রেষ্ঠ পদক দেয়া হয়।