কাজিরবাজার ডেস্ক :
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে দেশে-বিদেশে ব্যাপক কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। এ উপলক্ষে ইতোমধ্যে আগামী বছরকে ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার। ‘মুজিববর্ষ’ উদযাপনে বছরব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বিশ্বের ১৯৫ দেশে অনুষ্ঠানমালা আয়োজনের পাশাপাশি ঢাকার আয়োজনে যোগ দিতে আসবেন বিশ্বনেতারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ১০ জানুয়ারি দেশজুড়ে শুরু হবে কাউন্টডাউন বা ক্ষণগণনা। আগে বাস্তবায়ন কমিটি জানায়, ১০০ দিন আগে অর্থাৎ ৮ ডিসেম্বর জন্মশতবার্ষিকীর কাউন্টডাউন শুরু হবে। তবে পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু যেদিন (১০ জানুয়ারি) ঢাকায় ফিরে এসেছিলেন, সেই ঐতিহাসিক দিনটিকেই কাউন্টডাউনের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে। জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ১৭ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড ময়দানে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন দেশ-বিদেশের অতিথিরা।
ঢাকায় আসছেন বিশ্বনেতারা : জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিশ্বনেতাদের ঢাকায় আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রায় ৩৮ জন বিশ্বনেতা ঢাকায় আসতে পারেন। আমন্ত্রিত বিশ্বনেতাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেল, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ড. মাহাথির মোহাম্মদ, ভুটানের রাজা জিগমে নামগিয়েল ওয়াংচুক প্রমুখ।
জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি জানিয়েছে, ঢাকায় সারাবছর ধরে অনুষ্ঠান হবে। বছরব্যাপী এসব অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন বিশ্বনেতারা।
লন্ডন-নিউইয়র্কে কর্মসূচী : দেশের বাইরেও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনে এসব কর্মসূচী পালিত হবে। লন্ডন, নিউইয়র্ক, টোকিও, দিল্লী মিশনে ব্যাপকভাবে কর্মসূচী পালিত হবে। লন্ডনের এ্যালবার্ট হলে ঘটা করে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড, কলাম্বিয়া ও লন্ডন স্কুল অব ইকনোমিক্সেও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে।
তথ্যচিত্র নির্মাণ-বই প্রকাশ : বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তথ্যচিত্র নির্মাণ ও বই প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামী বছর বাংলা একাডেমি থেকে বঙ্গবন্ধুর জীবন-কর্মসহ নানা দিক নিয়ে ১০০টি বই প্রকাশ করা হবে। এছাড়া ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ১২টি ভাষায় অনুবাদ করা হবে। বিশ্বের খ্যাতনামা প্রকাশনা থেকে এসব বই প্রকাশ করা হবে। নানা ভাষায় অনূদিত হবে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর ভিত্তি করে বেশ কয়েকটি তথ্যচিত্র নির্মাণেরও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মেমোরিয়াল লেকচার : আগামী বছর ১৭ মার্চ থেকে বছরব্যাপী মেমোরিয়াল লেকচারের আয়োজন করা হয়েছে। জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটি ও সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) যৌথভাবে এই মেমোরিয়াল লেকচারের আয়োজন করবে। বিষয়ভিত্তিক এই লেকচারে বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ব নেতা, বুদ্ধিজীবী, লেখক, অধ্যাপকরা অংশ নেবেন।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর পোস্টার বাছাইয়ে সভা : এদিকে বাসস জানায়, দেশ-বিদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কর্মসূচীর ব্যাপক প্রচারের অংশ হিসেবে শনিবার পোস্টারসমূহের ডিজাইন এবং মুদ্রণের নির্দেশিকা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত পোস্টার ডিজাইন এবং ডিজাইনের গাইডলাইন প্রণয়ন কমিটির সভায় পোস্টার ডিজাইন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজন সার্বজনীন করার লক্ষ্যে সর্বসাধারণের মধ্যে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা এবং দেশব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টিতে পোস্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সভায় কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী প্রফেসর রফিকুন নবী, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, কবি তারিক সুজাত, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইসতাক হোসেন, জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান এবং কমিটির উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।