স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আজ বৃহস্পতিবার ঐতিহাসিক আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এজন্য মাদ্রাসার মাঠে প্রস্তুত করা হয়েছে নৌকার আদলে মঞ্চ। এর দৈর্ঘ্য ৬০ ফুট এবং প্রস্থ ৩০ ফুট। এ মঞ্চে ২০০ আসন থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলনে জেলা ও মহানগরের ডেলিগেট ছাড়াও হাজারের উপরে কাউন্সিলর উপস্থিত থাকবেন বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক জগলু চৌধুরী। প্রায় ৮ বছর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছে। এজন্য নেতাকর্মীদের মাঝে বেশ উৎসাহ বিরাজ করছে। সকালে সম্মেলন শেষে বিকেলে কবি নজরুল অডিটোরিয়াম কাউন্সিলের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্বে কারা আসতে পারে এ নিয়ে শোনা যাচ্ছে নানান কথা। পুরনোদের পাশাপাশি নতুন অনেক নামও আলোচিত হচ্ছে। দুই কমিটির শীর্ষ দুটি করে মোট ৪ পদের জন্য অন্তত এক ডজন প্রার্থী দৌড়ঝাঁপ করছেন। শহরজুড়ে বিলবোর্ড, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে তারা প্রার্থিতার জানান দিচ্ছেন। পদপ্রত্যাশী নেতাদের মধ্যে আছেন বিতর্কিত অনেকেও। তবে পদপ্রত্যাশী সকলেই বলছেন, সবকিছুই নির্ভর করছে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। ভোট নয়, সমঝোতার মাধ্যমেই কমিটি হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
শীর্ষ পদগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদটি। আব্দুজ জহুর চৌধুরী সুফিয়ান মারা যাওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন লুৎফুর রহমান। দলের কার্যক্রমে ততটা সক্রিয় নন বলে অভিযোগ রয়েছে এই বয়োবৃদ্ধ নেতার বিরুদ্ধে। তিনি এবার সভাপতি পদে প্রার্থী হবেন বলে মনে করেছিলেন অনেকে। তবে তার সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড বলছে, তিনি ভারমুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালনের আশা করছেন। প্রবীণ লুৎফুর রহমানের উপর দলীয় প্রধান ভরসা রাখলে সভাপতি পদের জন্য আলোচিত বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরীকে আবারও দেখা যেতে পারে সাধারণ সম্পাদক পদে। এই পদে তিনি বেশ সফল বলেই মনে করেন দলীয় নেতাকর্মীরা। সার্বক্ষণিক রাজনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি আছে শফিকুর রহমানের। একই সাথে দলের জন্য বারবার আত্মত্যাগ করে নেত্রীর গুড লিস্টেও রয়েছেন তিনি।
এমপিরা পদে আসতে পারবেন না এমন একটি ঘোষণা থাকায় সভাপতি পদে আলোচিত আরও দুই ব্যক্তি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ ও মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী এমপির শীর্ষ পদে আসার সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করেন দলটির নেতারা। তবে দলের হাইকমান্ডের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত ইমরান আহমদ চৌধুরীর শেষ মুহূর্তে জোরেশোরে প্রচারণায় নামাও ভাবিয়ে তুলেছে তাদের। আরেক সহসভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদও এবার সভাপতি পদে প্রার্থী। তবে ছোটভাই আসাদ উদ্দিনের কারণে এবারও বঞ্চিত থাকতে হতে পারে তাকে।
শফিকুর রহমান চৌধুরী আবার সাধারণ সম্পাদক হলে আশার ফানুস চুপসে যাবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশি বর্তমান সহসভাপতি শাহ ফরিদ আহমদ, যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, নিজাম উদ্দিন ও সুজাত আলী রফিক, কোষাধ্যক্ষ ড. তৌফিক রহমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোশাহিদ আলী, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক রণজিৎ সরকার, উপ-দফতর সম্পাদক জগলু চৌধুরীর।
মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই পদেও পরিবর্তনের সম্ভাবনা কম দেখছেন অনেকে। গত সিটি নির্বাচনে ব্যর্থতার দায় থাকলেও কামরান-আসাদকেই আবারো দেখা যেতে পারে নেতৃত্বে। তবে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে আগামীতে কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্ব দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। সেটি সত্য হলে এই পদে নতুন কেউ আসতে পারেন। এছাড়াও আলোচনায় আছেন সহসভাপতি এডভোকেট মফুর আলী, এডভোকেট রাজ উদ্দিন আহমদ ও মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালিক এবং যুগ্ম সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার।
আসাদ উদ্দিন আহমদ সভাপতি হলে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশির তালিকা অনেক লম্বা। নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন ও বিজিত চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল ও এটিএম হাসান জেবুল, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তপন মিত্র এবং বন ও পরিবেশ সম্পাদক জগদীশ চন্দ্র দাসের নামে আলোচনা আছে।