আরও ৩৫ পেঁয়াজ আমদানিকারককে জিজ্ঞাসাবাদ

8

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সুপরিকল্পিত-ভাবে সঙ্কট তৈরি ও অস্বাভাবিক বাড়ানোর অভিযোগে আরও ৩৫ পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইলে অধিদফতরের কার্যালয়ে দিনভর তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ সময় কয়েকজন আমদানিকার এ জিজ্ঞাসাবাদকে হয়রানি বলে অভিযোগ করেন। তাদের মতে এভাবে যদি সারাদিন বসিয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়- তাহলে তো পেঁয়াজের সঙ্কট আরও বাড়বে। সবাই এখন আতঙ্কে রয়েছে- কার কখন ডাক পড়ে।
এ বিষয়ে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম জানান, তথ্য সংগ্রহ করার জন্য তাদের ডাকা হয়েছে। তবে পেঁয়াজের কারসাজিতে কারও ওপর দায় চাপাতে চাচ্ছে না শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। তবে আমদানিকারকদের কাছ থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে, পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। একটি পেঁয়াজের জাহাজ আজকেও বন্দরে আসছে। খুব শীঘ্রই পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইলে পেঁয়াজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিকদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এসব তথ্য জানান শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মোঃ শহিদুল ইসলাম। এ সময় তিনি জানান, বাজারে পেঁয়াজের দাম সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনতে আমদানিকারকদের ডেকেছি। তাদের কাছ থেকে তথ্য নিয়েছি। তারা কোথায় মাল বিক্রি করেছে, কত দামে কী পরিমাণ বিক্রি করেছে। তাদের নাম-ঠিকানা নেয়া হয়েছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করব। কারণ আমদানিকারকরা বন্দর থেকে পেঁয়াজ বিক্রি করে দেন। এরপর ৩ থেকে ৪ হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে পৌঁছায়। এখন কোন পর্যাযয়ে মজুদ আছে এগুলো যাচাই-বাছাই করছি। আগামীতে প্রয়োজন হলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অনুমতিক্রমে আড়তদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের ডাকা হবে।
শুল্ক গোয়েন্দা মহাপরিচালক বলেন, আমদানিকারকদের পেঁয়াজ আমদানির জন্য উৎসাহ দেয়া হয়েছে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য কারও কাছে মজুদ যেন না থাকে সেটা নিশ্চিত করা। তবে কতটুকু পেঁয়াজ এখন পর্যন্ত দেশে মজুদ আছে, আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলেও তা জানা যায়নি। বাজারে দ্রুত আমদানি পেঁয়াজ সরবারহ নিশ্চিত করতে শুল্ক গোয়েন্দা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যখনই বন্দরে পেঁয়াজ আসবে তখনই যেন খালাস করে দেয়া হয়। অন্যদিকে তারা জানিয়েছেন, বন্দর থেকে সরাসরি বাজারে পেঁয়াজ বিক্রির ব্যবস্থা করবেন। আমদানিকারকরা কাদের কাছে কত দামে কত পরিমাণ বিক্রি করেছে, আমরা এসব তথ্য পেয়েছি। আমরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলব। তার নির্দেশক্রমে পরবর্তীতে পাইকারি ও আড়তদারদের ডাকা হবে। তবে পেঁয়াজ নিয়ে যারা অনৈতিক ব্যবসা করেছে তথ্য পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিন শুল্ক গোয়েন্দা আমদানিকারকরা জানান, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করার কারণে বাংলাদেশের বাজারে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তবে সরকার যদি তাৎক্ষণিক আমাদের ডেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নিত, তাহলে বাজার এতটা অসহনশীল হতো না। ইতোমধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পেঁয়াজের বাজারের কেজি ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে।
২৫০ টাকা পেঁয়াজের দাম সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করে আমদানিকারকরা জানান, পেঁয়াজ যে দামে আমদানি করা হয়েছে তাতে দেশের বাজারে কোন মতেই ভোক্তা পর্যায়ে ৯০ টাকার উপরে হওয়ার কথা না। কিন্তু মধ্যস্বত্ব কিছু লোক সঙ্কটের সুযোগ নিয়ে দামটা বাড়িয়েছে।