কাজিরবাজার ডেস্ক :
বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস এখন মহামারী হয়ে উঠছে। বিশ্বে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে ৪১ কোটি। বাংলাদেশে প্রায় ৭১ লাখ, বছরে বাড়ছে আরও ১ লাখ রোগী। শুধু ডায়াবেটিসের কারণে বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে একজনের মৃত্যু হয়। বিশ্বের সর্বত্র বয়সী মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তও ওই সব রোগের আক্রমণের পথ প্রশস্ত করে ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এখনই কার্যকর উদ্যোগ না নিলে বিশ্বে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে ৬৪ কোটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সুশৃঙ্খল জীবন যাপন করলে রোগী নিজেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। সচেতনতার অভাবে অনেকেই এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এমন অবস্থার মধ্য দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডায়াবেটিস এমন এক রোগ, স্বাস্থ্যশিক্ষাই যার প্রধান চিকিৎসা। যথাযথ স্বাস্থ্যশিক্ষা পেলে একজন ডায়াবেটিক রোগী চিকিৎসকের ওপর নির্ভর না করে এ রোগ ভালভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন। সারা বিশ্বেই ডায়াবেটিস এখন মহামারী আকার ধারণ করেছে। তবে উন্নত বিশ্বের তুলনায় উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ডায়াবেটিক রোগী বৃদ্ধির হার বেশি। ডায়াবেটিস সম্পর্কে অসচেতনতার কারণে ডায়াবেটিসজনিত জটিলতায় প্রতি বছর মৃত্যুবরণ করছে অসংখ্য মানুষ। ডায়াবেটিসে মোট আক্রান্তের শতকরা ৫ ভাগ আক্রান্ত টাইপ-১ ডায়াবেটিসে। এই প্রকার ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা ইনসুলিন ছাড়া বাঁচতে পারেন না। তাদের ইনসুলিন প্রাপ্তি মানবাধিকার হয়ে দাঁড়ায়। ইনসুলিন পায় না টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শত শত রোগী। গরিব রোগীদের পক্ষে বছরের পর বছর ধরে ইনসুলিন গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ হাসপাতাল, ক্লিনিক, থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যসেবা সেন্টারসমূহে সরকারী উদ্যোগে স্বল্প খরচে ইনসুলিন সরবরাহ এবং ডায়াবেটিস পরীক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার। ডায়াবেটিস এমন এক রোগ, যা সুনিয়ন্ত্রণে না থাকলে রোগী হৃদপি-, কিডনি ও চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। ডায়াবেটিস আছে এমন রোগীদের শতকরা ৫০ ভাগই জানেন না যে, তাদের ডায়াবেটিস আছে। তাই বছরে অন্তত একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা দরকার।
এদিকে, বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ এ কে আজাদ খান, মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন , বারডেমের মহাপরিচালক অধ্যাপক জাফর আহমেদ লতিফসহ সমিতির সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি এ কে আজাদ খান বলেন, বর্তমানে যেসব রোগের প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তার মধ্যে ডায়াবেটিস অন্যতম। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গণসচেতনতা সৃষ্টি করা দরকার। নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ডায়াবেটিস একটি ভয়াবহ রোগ। কায়িক পরিশ্রমের অভাব, মুটিয়ে যাওয়া, ফাস্টফুড জাতীয় খাদ্যের অভ্যাস ইত্যাদি কারণে দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডায়াবেটিসের কারণগুলো মানুষকে জানাতে হবে, সচেতন করতে হবে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভ্যাস ও শ্রম অভ্যাস সম্পর্কে ব্যাপক সচেতন থাকতে হবে।