নবীগঞ্জে ৬ বছরের শিশুকে নির্মম নির্যাতন, সৎ বাবা আটক

9

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ৬ বছরের শিশু জিসান মিয়াকে নগ্ন করে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে তারই সৎ বাবাসহ আত্মীয় স্বজনরা। এ ঘটনায় পুলিশ তার সৎ বাবাকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার ভোরে নবীগঞ্জ থানার ওসি আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। নির্যাতনের শিকার শিশুর মা সুমনা বেগম বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। গুরুতর আহত শিশুটিকে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় উদ্ধার করে মামার মাধ্যমে নানা বাড়িতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার চরগাঁও গ্রামের সুফি মিয়ার সাথে বিয়ে হয় সুমনা বেগমের। এরপর তাদের সংসারে জন্ম নেয় এক ছেলে ও এক মেয়ে। কিছুদিন পরই সুফি মিয়া মারা যান। তার মৃত্যুর পর সন্তানের কথা চিন্তা করে সফি মিয়ার ভাই স্বপন মিয়ার সাথে বিয়েতে রাজি হন সুমনা বেগম। বিয়ের পর জীবিকার তাগিদে সুমনা গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। সেখানে গিয়ে শান্তিতে থাকতে পারেননি তিনি। টাকার জন্য তার একমাত্র সন্তানকে নির্যাতন করতে থাকে দ্বিতীয় স্বামী স্বপন মিয়া। আর সেই নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করে তার কাছে পাঠানো হয়। তা দেখে হতভাগা মা সন্তানকে নির্যাতনকারীদের নিকট থেকে উদ্ধার করতে ধাপে ধাপে স্বপনের নিকট টাকা প্রেরণ করেন। সেই টাকা উত্তোলন করে স্বপন। বিষয়টি এলাকাবাসীর নজরে এলে স্থানীয় মুরব্বিদের সহযোগিতায় শিশু জিসান ও তার বোনকে মামার মাধ্যমে নানার বাড়ি পাঠানো হয়।
শিশুটির স্বজনরা জানান, বাবা হারা ছোট্ট দুই শিশুকে দাদা-দাদি আর চাচার কাছে রেখে জীবিকার তাগিদে গৃহকর্মী হিসেবে সৌদি আরব গিয়েছিলেন সুমনা বেগম। আর যাওয়ার আগে সন্তানদের দেখাশোনার জন্য তাদের চাচাকে কিছু টাকাও দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। সৌদি আরব যাওয়ার দুই মাস যেতে না যেতেই তার সন্তানদের ওপর শুরু হয় নির্যাতন। টাকা দেয়ার জন্য ৬ বছর বয়সী আপন ভাতিজাকে নগ্ন করে নির্যাতন করে সেই ভিডিও তার মায়ের কাছে পাঠিয়েছিলেন চাচা ও সৎ বাবা স্বপন।
নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান জানান, বিষয়টি পুলিশ সুপার তদারকি করছেন। নির্যাতনকারী স্বপন মিয়াকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির মা সুমনা বেগম বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।