জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুরে আদম ব্যাপারীর খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় মানুষের দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন সামছুল হক নামের এক যুবক। তিনি উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের খাশিলা এলোঙ্গি গ্রামের আবদুল হকের ছেলে। দেশে থাকা আদম ব্যাপারীর নাম হচ্ছে নুর মিয়া। তিনিও একই ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের মাহতাব মিয়ার ছেলে। কাতারে থাকা আদম ব্যাপারীর নাম হচ্ছে সুহেল মিয়া। তিনি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানা এলাকার বাসিন্দা। আদম ব্যাপারী সুহেল মিয়া সম্পর্কে নুর মিয়ার ভাগ্নে। তারা মামা-ভাগ্নে মিলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে অত্যন্ত কৌশলে এলাকার বেকার যুবকের টার্গেট করে বড় অংকের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে কাতার পাঠিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। আর ভাগ্য বদলের আশায় লাখ লাখ দিয়ে কাতার গিয়ে কাজ না পেয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে দেশে ফিরে আসছেন প্রতারণার শিকার হওয়া যুবকরা।
জানা যায়, গত কয়েক মাস আগে দেশে থাকা আদম ব্যাপারী নুর মিয়ার প্রলোভনের ফাঁদে পড়েন এলাকার সহজ-সরল যুবক সামছুল হক। স্ট্যাম্পে চুক্তিনামার মাধ্যমে সাড়ে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে এগ্রিম্যান্ট ভিসায় প্রতি মাসে এক হাজার রিয়াল বেতনে সামছুল হককে কাতার পাঠান নুর মিয়া। কাতার যাওয়ার পর নুর মিয়ার ভাগ্নে সুহেল মিয়ার মাধ্যমে প্রায় আড়াই মাস কাতারের বিভিন্ন স্থানে সামছুল হক কাজ করলেও বেতন নিয়ে নেন সুহেল মিয়া। চুক্তিনামায় এগ্রিম্যান্ট ভিসা থাকলেও সামছুল হককে পাঠানো হয় ভিজিট ভিসায়। যে কারণে কাতারে গিয়ে বিপদে পড়ে যান সামছুল হক। ১৫/২০ দিন কাতারের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে খেয়ে না খেয়ে অবশেষে সর্বস্বান্ত হয়ে দেশে ফিরে আসেন সামছুল হক।
এ নিয়ে চলতি ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর স্থানীয় খাশিলা গ্রামে শালিস বৈঠক বসে। বৈঠকে এলাকার গণ্যমান্য শালিসি ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। শালিসে আদম ব্যাপারী নুর মিয়া ক্ষতিগ্রস্ত সামছুল হককে নগদ ২ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার রায় হলেও এখন পর্যন্ত কোন টাকা পাননি সামছুল হক। এদিকে-শালিসিগণের রায় করা টাকা না দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান নুর মিয়া। এ ঘটনায় ন্যায় বিচার পাওয়ার আশায় মানুষের দ্বারেদ্বারে ঘুরছেন সর্বস্বান্ত হওয়া সামছুল হক।
এ ব্যাপারে ৬ নভেম্বর বুধবার ক্ষতিগ্রস্ত সামছুল হক বলেন, আমার কাছ থেকে নগদ সাড়ে ৩ লাখ টাকা নিয়ে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে কাতার পাঠায় আদম ব্যাপারী নুর মিয়া। সেখানে আমি কাজ করলেও বেতন তুলে নিতো তার ভাগ্নে সুহেল। অবশেষে কয়েক দিন উপোষ থেকে দেশে ফিরে আসি। এসব আদম ব্যাপারীদের খপ্পরে পড়ে আমি ও আমার পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। এছাড়া শালিসি ব্যক্তিদের রায়ে ২ লাখ টাকা ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও টাকা না দিয়ে পালিয়েছে নুর মিয়া। এখন নিরুপায় হয়ে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত সামছুল হক জানান। এদিকে-চেষ্টা করেও দেশে থাকা আদম ব্যাপারী নুর মিয়ার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
