ক্রীড়াঙ্গন রিপোর্ট :
অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ারে অসংখ্য সাফল্যের পালক যুক্ত হয়েছে লিওনেল মেসির মুকুটে। তবে এতসব অর্জনের মাঝেও তার সবচেয়ে বড় অপূর্ণতা বিশ্বকাপ না জিততে পারা। কিন্তু এ নিয়ে তার মধ্যে কোনো হতাশা কাজ করে না। বরং ‘সৃষ্টিকর্তা’ যা দিয়েছেন তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে চান তিনি।
আর্জেন্টিনার হয়ে সবচেয়ে বেশি গোলের মালিক হয়েও এখন পর্যন্ত সিনিয়র দলের হয়ে কোনো শিরোপা জেতার স্বাদ পাননি মেসি। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার সবচেয়ে বড় অর্জন বলতে ২০০৫ সালে জেতা অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ আর ২০০৮ অলিম্পিকে স্বর্ণপদক।
২০১৪ বিশ্বকাপ আর কোপা আমেরিকার দুই ফাইনালে হেরে যাওয়ার পর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মেসি। অবসরের ঘোষণাও দিয়েছিলেন। পরে অবশ্য সমর্থকদের চাপে ফিরে এসেছেন।
জাতীয় দলের জার্সিতে বিবর্ণ মেসি ক্লাব ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তি। ক্লাব পর্যায়ে সম্ভাব্য সবই জেতা হয়ে গেছে তার। কাতালানদের হয়ে ক্লাব রেকর্ড ৩৪টি শিরোপা জেতার স্বাদ পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে লা লিগায় ১০টি আর ৪টি আছে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা।
ক্লাব ফুটবলে এতসব শিরোপার বিনিময়ে বিশ্বকাপ জিততে চান কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মেসির সাফ জবাব, ক্যারিয়ারের কোনোকিছুই বদলাতে চান না তিনি। ‘টিওয়াইসি স্পোর্টস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বার্সা অধিনায়ক বলেন, ‘বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে পারাটা হতো দারুণ কিছু। কিন্তু আমি মনে করি না আমার ক্যারিয়ারের কোনোকিছু এজন্য বদলাতে চাইবো। এসব আমি পেয়েছি, যা আমাকে সৃষ্টিকর্তা দিয়েছেন।’
ক্লাবের জার্সিতে পাওয়া সফলতা জাতীয় দলে অনূদিত করতে না পারায় নিজ দেশে প্রায়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয় মেসিকে। অনেকের অভিযোগ, মেসি তার সেরা পারফরম্যান্স বার্সার জন্য জমিয়ে রাখেন। সমর্থকদের সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের পরও ২০১১ সাল থেকে জাতীয় দলের নেতৃত্বভার বহন করছেন তিনি।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপটাই বেশি পোড়ায় মেসিকে। কারণ সেবার ফাইনালে ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের গোলে শিরোপা স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায় আর্জেন্টিনার। তবে দলের ব্যর্থতার মাঝেও আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল যায় মেসির ঝুলিতে।
এরপর কোপা আমেরিকায় টানা দুই ফাইনালে চিলির কাছে হারের ধাক্কা সামলানো সত্যি কঠিন কাজ। শেষবার তথা ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানেন। তবে দলের প্রয়োজনে তথা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অংশ নিতে অবসর ভেঙে ফিরে আসেন তিনি এবং দলকে রাশিয়ায় নিয়ে যান।
২০১৮ বিশ্বকাপটাও হতাশ করেছে মেসিকে। দুর্বল দল নিয়ে লড়াই করতে হয়েছে তাকে। দলও বিদায় নেয় শেষ ষোলো থেকেই। আবারও বিশাল চাপ আর প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ার পর স্বেচ্ছা অবসরে চলে যান মেসি।
এরপর আবার চলতি বছরের কোপা আমেরিকার আগে দলের সঙ্গে যুক্ত হন মেসি। কিন্তু এবারও দলীয় ব্যর্থতা সঙ্গী হয় তার। শুধু তাই না, চিলির বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তাকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয়। এর আগে ব্রাজিলের বিপক্ষে সেমিফাইনালে রেফারি আর কনমেবলের সমালোচনা করায় তিন ম্যাচ নিষিদ্ধ হন তিনি।