কাজিরবাজার ডেস্ক :
পবিত্র আখেরি চাহার শম্বা আজ বুধবার। মহনবী হযরত মুহম্মদ (সা:)-এর রোগ থেকে মুক্তি দিবস। ইসলামী বিশেষজ্ঞদের মতে, হিজরী সালের সফর মাসের শেষ বুধবার পবিত্র আখেরি চাহার শম্বা পালিত হয়। মুসলিম বিশ্বে অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ স্মারক দিবস হিসেবে এই দিনকে উল্লেখ করা হয়েছে। তাদের মতে, শেষ নবী হযরত মুহম্মদ (সা:) সফর মাসের শেষদিকে প্রচ- অসুস্থ হয়ে পড়েন। সফর মাসের শেষ বুধবার তিনি অনেকটাই সুস্থতা লাভ করেন। সেই হিসেবে সফর মাসের শেষ বুধবারকে বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় আখেরি চাহার শম্বা হিসেবে পালন করে থাকে।
এদিকে পবিত্র আখেরি চাহার শম্বা যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের পক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচী নেয়া হয়েছে। এসব কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ওয়াজ, মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভায়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে বুধবার সারাদেশে ১৪৪১ হিজরীর পবিত্র আখেরি চাহার শম্বা উদ্যাপিত হবে। হিজঈ সনের সফর মাসের শেষ বুধবার মুসলিম উম্মাহ আখেরি চাহার শম্বা পালন করে আসছে। এদিনে ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহম্মদ (সা:) জীবনে শেষবারের মতো রোগমুক্তি লাভ করেন। রাসূলুল্লাহর (সা:) আরোগ্য লাভের সংবাদে মদিনাবাসী আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন। তারা সাধ্যমতো দান-সদকা ও শুকরিয়া নামাজ আদায় করেন।
এ উপলক্ষে আজ বাদ যোহর বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। মাহফিলে ওয়াজ পেশ করবেন ঢাকা পূর্ব রাজাবাজার জামে মসজিদের খতীব মুফতি মাওলানা মাহবুবুর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নূরুল ইসলাম।
ইসলামী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসলামের শেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ মহানবী হযরত মুহম্মদ (সা:)-এর জীবনে আখেরি চাহার শম্বা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নবী করিম (সা:) ইন্তেকালের আগে এই দিনে কিছুটা সুস্থতা বোধ করেছিলেন। ফারসিতে এই দিনটিকে আখেরি চাহার শম্বা নামে অভিহিত করা হয়। এই দিনে তিনি গুরুতর অসুস্থ অবস্থা থেকে রোগমুক্তি লাভ করেন। গোসল করেন এবং মসজিদে নববীতে ইমামতি করেন। এরপর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। অনেকদিন পর তাকে সুস্থ অবস্থায় দেখে সাহাবিরা খুবই আনন্দিত হন। পরবর্তীতে এই দিনটি মুসলমানদের কাছে আনন্দের দিন হিসেবে পালিত হতে থাকে। তবে মুসলিম বিশ্বের অনেক দেশে পালন করা হয় না।
ফারসি শব্দমালা আখেরি চাহার শম্বা অর্থ শেষ চতুর্থ বুধবার। রাসূলুল্লাহ (সা:) জীবনে শেষবারের মতো রোগমুক্তি লাভ করেন বলে দিনটিকে মুসলমানরা প্রতি বছর ‘শুকরিয়া দিবস’ হিসেবে পালন করেন। তারা নফল এবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে দিবসটি অতিবাহিত করেন। তাই উম্মতে মুহম্মদীর আধ্যাত্মিক জীবনে আখেরি চাহার শম্বার গুরুত্ব ও মহিমা অপরিসীম।
মহানবীর সুস্থ হওয়ার খবরে মদিনাবাসী আনন্দ-খুশিতে আত্মহারা হয়ে যায়। তারা দলে দলে নবীকে এসে একনজর দেখে যায়। সকলে তাদের সাধ্যমতো দান, সদকা করেন। শুকরিয়া নামাজ আদায় ও দোয়া করেন। নবীর রোগমুক্তিতে তাঁর অনুসারীরা এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে তাদের কেউ দাসমুক্তি করেন, কেউবা অর্থ বা উট দান করেন। এই খবরে আবু বকর সিদ্দিক ৫ হাজার দিরহাম, উমর ৭ হাজার দিরহাম, ওসমান ১০ হাজার দিরহাম, আলী ৩ হাজার দিরহাম, আবদুর রহমান ১শ’ উট, ইবনে আউফ ১শ’ উট দান করেন।