সিলেট ও রংপুর বিভাগ ডেঙ্গুমুক্ত

14

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সরকারি হিসেবে দেশের রংপুর ও সিলেট বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় কোনো ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হননি। এছাড়া ঢাকা শহর ব্যতীত ঢাকা বিভাগে ১৯, চট্টগ্রাম বিভাগে ১১, খুলনায় ৪১, রাজশাহীতে ৬, বরিশালে ৪২ এবং ময়নসিংহ বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৩ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে রাজধানীর মাত্র ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৪৪৩ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি রয়েছেন। একই সময়ে ঢাকার বাইরে ৬১০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সারাদেশে মোট ডেঙ্গুরোগী ভর্তি রয়েছেন এক হাজার ৫৩ জন।
তিনি আরও বলেন, রাজধানীর সরকারি হাসপাতাল গুলোর মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ৯, মিটফোর্ডে ৮, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ১, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ২, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ২, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫ ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৭ জনসহ ঢাকা শহরের সরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত হাসপাতালে মোট ৪১ জন ভর্তি রয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতালে রয়েছেন ১৯ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে আরও নতুন ৬২ জন ভর্তি হয়েছে ও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩৮ জন এবং ঢাকার বাইরে আরও ১২২ জন নতুন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন। ছাড়পত্র পেয়েছে ১১১ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে আরও ১৮৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগে ২৪ ঘণ্টায় (বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত) এ সংখ্যা ছিল ১৭৮ জন। অর্থাৎ সারাদেশে এ সময়ে রোগী কমেছে ৬ জন। আর এর আগের ২৪ ঘণ্টায় রোগীর সংখ্যা ৭০ জন কম ছিল।
এছাড়া চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৩৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৮ জন, মার্চে ১৭ জন, এপ্রিলে ৫৮ জন, মে মাসে ১৯৩ জন, জুনে এক হাজার ৮৮৪ জন, জুলাইয়ে ১৬ হাজার ২৫৩ জন, আগস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন এবং সেপ্টেম্বরে ১৬ হাজার ৮৫৬ জন এবং অক্টোবরের ১৯ দিনে মোট ৫ হাজার ৪০৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশে ২০১৯ সালেই সর্বোচ্চ ডেঙ্গুতে আক্রান্তের রেকর্ড স্থাপিত হয়েছে। যার মধ্যে আগস্ট মাসে ছিল সর্বোচ্চ বলেও জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক আয়েশা।
হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন ৯৩ হাজার ৩৬১ জন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র গ্রহণ করেছেন ৯১ হাজার ০৬২ জন। অর্থাৎ আক্রান্তদের ৯৮ দশমিক ৬ শতাংশ রোগীই ছাড়পত্র পেয়েছেন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) কাছে ডেঙ্গু সন্দেহে ২৪৬ জন মৃত রোগীর তথ্য এসেছে। এর মধ্যে ১৫৮ জনের মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৯৮ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত মৃত্যু নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে মৃতের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে বলে জানা যাচ্ছে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে এ সংখ্যা এখনো সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি। হাসপাতলে ভর্তি হয়ে মৃত হয়েছে ৯৮ জন ডেঙ্গুরোগীর। এর মধ্যে এপ্রিলে ২, জুনে ৬, জুলাইয়ে ৩৪, আগস্টে ৪৭ এবং সেপ্টেম্বর মাসে ৪ জনের। আর এ সব মৃত্যুর মধ্যে শিশু মৃত্যুর হারই সবচেয়ে বেশি বলে জানায় প্রতিষ্ঠানটি।