পিন্টু দেবনাথ কমলগঞ্জ থেকে :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা বাগানে স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে অনৈতিকভাবে মেলামেশা করায় চা শ্রমিকরা প্রেমিককে আটক করে নিজ বাড়িতে পাঠঠিয়েছিল। পরবর্তীতে আবারও গভীর রাতে প্রেমিকার বাড়িতে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করে প্রেমিক। এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দিলে ভোরে পুলিশ প্রেমিক ও প্রেমিকাকে আটক করে থানা নিয়ে যায়। এ ঘটনাটি ঘটে বুধবার (১৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১২টায় মাধবপুর চা বাগানের পশ্চিম লাইন শ্রমিক বস্তিতে। প্রেমিক স্বপন কুমার নুনিয়া (৪০) মাধবপুর চা বাগানের বাজার লাইনের নারায়ণ নুনিয়ার ছেলে।
মাধবপুর চা বাগান সূত্রে জানা যায়, এ চা বাগানের ইউপি সদস্যা সুমিত্রা বালা নুনিয়ার ছেলে স্বপন কুমার নুনিয়া বিবাহত হলেও পশ্চিম লাইন শ্রমিক বস্তির রামু রবিদাসের স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে (শান্তি রবিদাসের) সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে দীর্ঘ দিন ধরে অনৈতিকভাবে মেলামেশা করছিল। বুধবার রাতে এভাবে অনৈতিক মেলামেশার কারণে (শান্তি রবিদাসের) স্বজন ও চা শ্রমিকরা তাদেরকে আটক করে নিজ নিজ বাড়িতে ফেরৎ পাঠিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর রাতে প্রেমিকা (শান্তি রবিদাস) প্রেমিক স্বপন নুনিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে গ্রহন করে নেওয়ার জোর দাবি জানালে স্বপনের মা ইউপি সদস্যা সুমিত্রা বালা নুনিয়া ধমকিয়ে তাকে ফেরৎ পাঠান। এর পর আবার প্রেমিক স্বপন নুনিয়া প্রেমিকার (শান্তি রবিদাসের) বাড়িতে গিয়ে তার কক্ষেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্ম হত্যার চেষ্টা করে। ঘটনাটি টের পেয়ে বাড়ির লোকজন হাল্লা চিৎকার দিলে চা শ্রমিকরা এগিয়ে এসে দঁড়ি কেটে স্বপন নুনিয়াকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে।
বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করে কমলগঞ্জ থানায় খবর দিলে ভোর ৫টায় উপ-পরিদর্শক ফরিদ মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এসে প্রেমিক ও প্রেমকিা দুইজনকেই থানায় নিয়ে আটকিয়ে রাখে। মাধবপুর চা বাগানের শ্রমিকরা আরও জানান, স্বপন কুমার নুনিয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ইতিপূর্বে আরও ৫টি পরিবারের ক্ষতি করেছে। সে ইউপি সদস্যার ছেলে বলে ভয়ে কেই তার প্রতিবাদ করে না।
মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চা বাগানে সামাজিক প্রথা খুবই শক্ত। এ ঘটনাটি দুই সম্প্রদায়ের সমাজপতি ও প্রতিনিধিরা সামাজিক বৈঠক করে সমাধান করার চেষ্টা করছেন।
কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ফরিদ মিয়াও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধির জিম্মায় মুচলেখার মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। কোন পক্ষই কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন না। তারা চা বাগানে সামাজিক বৈঠক করে সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন। তাই এ ঘটনায় আইনী কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।