কমলগঞ্জে মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি কক্ষে ধসে পড়লো ছাদের পলেস্তার

16

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি জীর্ণ ভবনের ছাদের একাংশে পলেস্তারা ধসে পড়েছে। দুর্গাপূজায় স্কুল বন্ধ থাকায় বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ভবনের ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়ে। ছাদ খসে পড়ার কারণে আগামী সোমবার থেকে শুরু হওয়া নির্বাচনী পরীক্ষা গ্রহণ করা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এছাড়া পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের জায়গা সংকুলান নিয়ে বিপাকে শিক্ষকরা।
জানা যায়, উপজেলার চা বাগান অধ্যুষিত মাধবপুর ইউনিয়নের একমাত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৯৪-৯৫ অর্থ বছরে একটি দোতলা ভবন নির্মিত হয়। নি¤œমানের ভবনটির নিচ তলায় শিক্ষক শিক্ষার্থীদের জন্য তিনটি কক্ষে পাঠদান ও অফিস হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠার পরও শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ভবনের কক্ষ সমূহ ব্যবহার করছেন। তবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। পূজার বন্ধের সময়ে যেকোন দিন তিনটি কক্ষে ছাদের পলেস্তারা ভারী অংশে ধসে পড়ে। পলেস্তারার বড় বড় ইটের টুকরো চেয়ার-টেবিল ও ফ্লোরে পড়ে আছে। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বড় ধরণের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন বলে দাবী করছেন স্থানীয়রা। শনিবার (১২ অক্টোবর) বিকার ৩টায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান অফিস কক্ষের তালা খুলে গিয়ে অফিস কক্ষের ছাদ ধসে পড়ার দৃশ্য দেখতে পান। একই সাথে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের দুটি কক্ষ খুললে একই দৃশ্য দেখে হতবম্ভ হয়ে পড়েন। সাথে সাথে ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। বিদ্যালয়টিতে মাধবপুর ইউনিয়নের একমাত্র পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র। তাছাড়া সোমবার থেকে এসএসসি শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠানের কথা। তবে ভবনের তিনটি কক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ ও ছাদের পলেস্তারা ধ্বসে পড়ায় এখন শিক্ষার্থীদের জায়গা সংকুলান নিয়ে বিপাকে রয়েছেন শিক্ষকরা। চা বাগান অধ্যুষিত এলাকায় বিদ্যালয়টিতে নতুন ভবনের কাজ চলমান থাকলেও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের জায়গা সংকুলানের অভাব দেখা দিয়েছে।
শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ, মৌলভীবাজার এর সহকারী প্রকৌশলী মফিজুল ইসলাম জানান, ভবনটি পুরনো ও ঝুঁকিপূর্ণ বলে দুইমাস আগে জেলা শিক্ষা প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। জেলা শিক্ষা প্রকৌশলী ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে মাধবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান বলেন, সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ শোকরিয়া শারদীয় দুর্গাপূজার কারণে বিদ্যালয়টি বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বড় ধরণের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন। আগামী সোমবার বিদ্যালয়ের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ধসে পড়া ভবনে ১শত ৫০জন শিক্ষার্থীর আসন বিন্যাস করা হয়েছিল। ভবনের ছাদ ধসে পড়ায় অফিস করা ও পরীক্ষা গ্রহণ নিয়ে এখন দুচিন্তায় রয়েছি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, তিনটি কক্ষ বন্ধ হওয়ায় পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি শিক্ষার্থীদের নির্বাচনী পরীক্ষায় কিছুটা ভোগান্তি দেখা দেবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বিদ্যালয় ভবনের কক্ষের ছাদের পলেস্তারা ধ্বসে পড়ার বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে দেখবেন বলে জানান।