স্টাফ রিপোর্টার :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনা যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন, এটা শুধু ঢাকায় নয়, সারা বাংলাদেশে হবে। সুনামগঞ্জ থেকে সুন্দরবন, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া যেখানে টেন্ডারবাজ, চাঁদাবাজ, যেখানে মাদক ব্যবসায়ী, দুর্নীতিবাজ, সেখানেই শেখ হাসিনার
অ্যাকশন। এই অ্যাকশন চলবে। তিনি বলেন, অপকর্মকে আর আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। বিএনপি বিষোদ্গার করছে, কারণ তারা একটি দুর্নীতিবাজ দল। তারা একটি সন্ত্রাসী দল। তারা দুর্নীতি করেছে, হাওয়া ভবন করেছে, লুটপাট করেছে, ক্যাসিনো সৃষ্টি করেছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩ টায় নগরীর রিকাবীবাজারস্থ কাজী নজরুল অডিটোরিয়ামে সিলেটে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সিলেট জেলা কমিটির সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আ ন ম শফিকুল হক স্মরণে শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
এতে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপি এই শুদ্ধি অভিযান নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। শেখ হাসিনা নিজের দলের ভেতরে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন এটা বিএনপি সহ্য করতে পারছে না। তাই এই অভিযানকে তারা ভিন্নখাতে প্রবাহিতের চেষ্টা করছে। অথচ এই অভিযানের কারণে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা আরও বেড়ে গেছে।
জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, দেশে বিএনপির আমলে টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি, চাঁদাবাজিসহ মাদক, জুয়া ও সন্ত্রাসের যাত্রা শুরু হয়েছিল। কিন্তু তখন তারা নিজেদের দলের কারোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়নি। খালেদা জিয়া যা পারেননি, শেখ হাসিনা তা করে দেখাচ্ছেন। তাই সরকারের জনপ্রিয়তা অনেকগুণ বেড়ে গেছে। সিলেটে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দলের মধ্যে কোন্দল মেটাতে না পারলে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যাবে না। দলের কোন্দল মিটিয়ে দুঃসময়ের কর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে বিলম্বের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বারবার প্রস্তুতি নিয়েও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজের অগ্রগতি হয়নি। আমার মন্ত্রণালয়ের এক সচিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এই প্রকল্পে দেরি হয়েছে। তবে এখন সব জটিলতা কেটে গেছে। শীঘ্রই ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ৬ লেনে উন্নীতের কাজ শুরু হবে।
প্রয়াত নেতা আ.ন.ম শফিকুল হককে দুঃসময়ের কান্ডারি উল্লেখ করে তিনি বলেন, শফিকুল হক অন্ধকারের পথ অতিক্রম করেছেন। তিনি অকুতোভয় ও আপোষহীন ছিলেন। এমন একনিষ্ট ত্যাগী কর্মী আমি খুব কম দেখেছি।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী ও মহানগর সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিনের যৌথ পরিচালনায় শোকসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, কেন্দ্রীয় সদস্য রফিকুর রহমান। শোকসভায় আরও বক্তব্য দেন, সাংসদ দেওয়ান শাহ নেওয়াজ গাজী, মাহমুদ-উস সামাদ চৌধুরী কয়েস এমপি, সাবেক সাংসদ সৈয়দা জেবুন্নেছা হক, জেলা সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ, মাসুক উদ্দিন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আবদুল খালিক, সিরাজুল ইসলাম, রাজ উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়েজুর আনোয়ার আলোয়ার, বিজিত চৌধুরী, মো. জাকির হোসেন, জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এড. নিজাম উদ্দিন, সুজাত আলী রফিক, নাসির উদ্দিন খান, জেলা সাংগঠনিক এড. শাহ্ মোশাহিদ আলী, মো আলী দুলাল, মহানগর সাংগঠনিক শফিউল আলম নাদেল, এটিএম হাসান জেবুল ও নুরুল ইসলাম পুতুল প্রমুখ।
এর আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌছেন। পরে হযরত শাহজালাল (রহ.) এর মাজার জিয়ারতে যান ওবায়দুল কাদের। এরপর সাড়ে ১২টায় সেখান থেকে সার্কিট হাউসে যান তিনি। আজ শুক্রবার সকাল ৯টায় নগরীর তোপখানায় সড়ক জনপথ জোন অফিসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন তিনি।