কাজিরবাজার ডেস্ক :
তিন ধাপে তৃণমূলে সম্মেলন করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আগামী অক্টোবরের মধ্যে ইউনিয়ন, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে উপজেলা এবং বেধে দেওয়া ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা ও মহানগরের সম্মেলন সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে দলটি। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দলটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও মহানগরের সম্মেলন সম্পন্ন করতে হয়। একইসঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ সহযোগী সংগঠনগুলোরও সম্মেলনের পর কেন্দ্রীয় সম্মেলন করা হয়।
আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানান, জেলাগুলোর সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণে স্ব স্ব বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা কাজ করছেন। ইতোমধ্যেই বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন উপজেলায় সম্মেলন চলছে। মূলত জেলা কমিটির তত্ত্বাবধানে উপজেলাগুলোর সম্মেলন সম্পন্ন হয়। আর উপজেলা সম্মেলনে অতিথি কে থাকবেন তা নির্ধারণ করে দেন সাংগঠনিক সম্পাদকরা।
সূত্র জানায়, দলের গত কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সম্মেলনের তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার পর বিভাগীয় যুগ্ম সাধারণ এবং সাংগঠনিক সম্পাদকরা কয়েক দফা অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে সম্মেলন প্রস্তুতির জন্য ১২টি কমিটি গঠন করা হয়। এর পাশাপাশি প্রতিদিনই দলের সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলন প্রস্তুতির বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করছেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।
সাধারণত কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ তৃণমূলে অর্থাৎ জেলা-উপজেলা-ইউনিয়নের সম্মেলন করে থাকে। তবে বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার মাত্র এক মাস বাকি থাকলেও সম্মেলন হয়েছে মাত্র একটি জেলার। এ নিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এমনও মন্তব্য করেন যে, বিভাগীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকরা জেলায় জেলায় যান, খাওয়া-দাওয়া করে আসেন, কাজের কাজ কিছুই করেন না। তিনি দ্রুত তৃণমূলের সম্মেলন শেষ করার নির্দেশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তৃণমূলের সম্মেলন সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়ে জেলা-উপজেলায় চিঠি দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
জানতে চাইলে দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘তৃণমূলের সম্মেলন সম্পন্ন করার জন্য ইতোমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পুরো অক্টোবর জুড়ে সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলন চলবে। ১ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে উপজেলাগুলোর সম্মেলন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে।’ এরপর ১৬ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে সব সাংগঠনিক জেলার সম্মেলন শেষ করেই কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, প্রশাসনিকভাবে সারাদেশে ৬৪টি জেলা হলেও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক জেলা ৭৩টি। প্রতিটি মহানগর কমিটি জেলা কমিটির মর্যাদাসম্পন্ন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্ল্যাহ বলেন, ‘সম্মেলনের প্রস্তুতি আগে থেকেই চলছিল। কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের পর তা আরও জোরালো হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা এ নিয়ে কাজ করছেন।’