মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
জগন্নাথপুরে চিকিৎসা সেবায় যাঁদের অবদান রয়েছে ও রোগীদের রয়েছে যথেষ্ট ভরসা। প্রতিদিন এসব চিকিৎসকের কাছে লাইন দিয়ে চিকিৎসা সেবা নিয়ে থাকেন রোগীরা। তাঁরা বছরের পর বছর ধরে অকাতরে দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসা সেবা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে সুনামের সাথে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মধু সুধন ধর। তিনি এলাকায় গরীবের ডাক্তার নামে পরিচিত। একই ভাবে গত ৯ বছর ধরে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডাঃ শারমিন আরা আশা। এছাড়া দীর্ঘ ২৮ বছর ধরে অকাতরে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ডাঃ দিব্য রঞ্জন দে। প্রতিদিন তাঁদের কাছে শতশত রোগী লাইন দিয়ে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন।
এর মধ্যে গর্ভবতী মায়েদের ডেলিভারি কালে রোগী ও অভিভাবকরা সবার আগে খোঁজেন জগন্নাথপুর হাসপাতালের নার্স ইনচার্জ খোদেজা বেগমকে। তিনি আসলেই যেন মানুষের মনে শান্তি ফিরে আসে। মানুষের আত্ম-বিশ^াস ও ভরসা নার্স খোদেজা বেগম থাকলে আর সমস্যা হয় না। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে নার্স খোদেজা বেগম এভাবেই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
তাছাড়া হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগী ও অন্য রোগীদের জন্য ওষুধ কিনতে গেলে সবার আগে হাসপাতাল পয়েন্টে অবস্থিত ইসলাম মেডিকেলের নাম চলে আসে। এখানে রেজিস্ট্রার চিকিৎসকের দেয়া প্রেসক্রিপশন ছাড়া ওষুধ বিক্রি করা হয় না। ওষুধ বিক্রি কালে ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। পাওয়া যায় দেশ-বিদেশের সব ধরণের ওষুধ। খোলা থাকে দিন-রাত। যে কারণে ইসলাম মেডিকেল সবার কাছে প্রিয়। এছাড়া পৌর পয়েন্টে অবস্থিত মা মেডিকেল ও রাণীগঞ্জ রোডে অবস্থিত উদয় ফার্মেসী। তাদেরও রয়েছে ব্যাপক পরিচিত ও সুনাম।
কবিরাজি চিকিৎসায় এগিয়ে রয়েছে রাণীগঞ্জ রোডে অবস্থিত সাদি ইউনানী মেডিকেল। এখানে দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ইনজেকশন ও অপারেশন ছাড়াই নাসা, টনসিল, টিউমার, অর্শ, গেজ, একশিরা, কিডনি, পিতের পাথর, মূত্র নালির পাথর, শালগরা সহ জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশ দেশীয় চিকিৎসক সমিতির সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি পল্লী চিকিৎসক ডাঃ সৈয়দ নবি হোসেন।
১৪ সেপ্টেম্বর শনিবার সরজমিনে দেখা যায়, ডাঃ নবি হোসেনের মেডিকেলে নারী ও শিশু রোগীদের ভীড়। তারা লাইন দিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ সময় জগন্নাথপুর উপজেলার কাদিপুর গ্রামের ফাতেমা বেগম, সুলতানা বেগম, জগন্নাথপুর গ্রামের আফিয়া বেগম, চিলাউড়া গ্রামের শরীফ উল্লাহ, ছাতকের ভাতগাঁও গ্রামের হোসনা বেগম, সুরুকজান বিবি, সামিয়া বেগম, মইনবি বেগম, খোদেজা বেগম সহ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা বলেন, কবিরাজ নবি হোসেনের চিকিৎসায় আমরা বহু রোগ থেকে রক্ষা পেয়েছি। যে কারণে আমাদের পরিবারের অন্য সদস্য ও এলাকার অন্য রোগীদের উৎসাহিত করছি এখানে এসে চিকিৎসা নিতে। এ ব্যাপারে ডাঃ নবি হোসেন বলেন, সুস্থ করার মালিক আল্লাহ। আমি শুধু উচিলা করছি চিকিৎসা সেবা প্রদানের মাধ্যমে।
এদিকে-দোয়া এর মাধ্যমে সুনামের সাথে তদবির করছেন ইকড়ছই গ্রামের বাসিন্দা আজিম শাহ আল চিশতি। তাঁর কাছ থেকে দোয়া ও তেল পড়া নিতে প্রতিদিন শতশত মানুষ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসেন। এখানে মানুষ উপকৃত হচ্ছেন বলে রোগীরা জানান। এছাড়া দীর্ঘ ৮ বছর ধরে ঝাড়ফোকের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন জগন্নাথপুর বাজারে ফঠিক চন্দ। তিনি এলাকায় নাপিত নামে পরিচিত। তাঁর কাছ থেকে ঝাড়ফোক ও আদা পড়া নিয়ে মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। এভাবেই বিভিন্ন ভাবে চিকিৎসা সেবা নিয়ে মানুষ উপকৃত হচ্ছেন এবং ডাক্তার সহ অন্যান্য চিকিৎসকরা চিকিৎসা সেবা দিয়ে অবদান রেখে চলেছেন।