কাজিরবাজার ডেস্ক :
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস আজ। প্রতি বছরের মতো এবারও বিশে^র অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি উদযাপন করা হবে। এ উপলক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ বছর ইউনেস্কো এ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে ‘লিটারেসি এ্যান্ড মাল্টিলিঙ্গুয়ালিজম’। এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাংলায় প্রতিপাদ্য করা হয়েছে, ‘বহুভাষায় সাক্ষরতা, উন্নত জীবনের নিশ্চয়তা’।
আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেছেন, বর্তমান সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান সরকার দেশের নিরক্ষর জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরতা দানের লক্ষ্যে ৬৪ জেলায় মৌলিক সাক্ষরতা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। আমাদের নিরলস ও অব্যাহত প্রচেষ্টার ফলে বিগত এক দশকে সাক্ষরতার হার ২৮ দশমিক ১২ শতাংশ বেশি বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৭৩ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সাক্ষরতা ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা সংক্রান্ত উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে দেশকে নিরক্ষরতার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে চাই। এছাড়াও জাতিসংঘ প্রণীত টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৪ (এসডিজি-৪) অনুযায়ী মানসম্মত ও সর্বজনীন শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার নানামুখী কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। মায়ের ভাষায় সাক্ষরতা অর্জনের পাশাপাশি অন্য এক বা একাধিক ভাষা শেখার সুযোগ সৃষ্টি করে আমদের শিশু, কিশোর ও যুবদের ‘গ্লোবাল ভিলেজে’ যুক্ত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বহু ভাষায় সাক্ষরতালব্ধ জ্ঞান বিভিন্ন দেশ, সংস্কৃতি ও ভাষার মধ্যে দৃঢ় মেলবন্ধন তৈরি করে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাদের যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যক্তি জীবনমান ও দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ অপরিহার্য। এ বছরের সাক্ষরতা দিবসের প্রতিপাদ্য তা অর্জনের দিকটিকেই নির্দেশ করে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭২ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথমবার আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উদযাপিত হয়। স্বাধীনতার পর পরই বঙ্গবন্ধুর সরকার কর্তৃক প্রণীত সংবিধানের ১৭(গ) অনুচ্ছেদে আইনের দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূর করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের অঙ্গীকার করে।
শেখ হাসিনা বলেন, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন ও মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে জাতির পিতার কাক্সিক্ষত ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও নিরক্ষরতামুক্ত সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারব। তিনি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস পালিত হচ্ছে জেনে আনন্দ প্রকাশ এবং দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচীর সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
এদিকে দিবসকে সামনে রেখে এক সংবাদ সম্মেলনে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন জানান, সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় দেশে বর্তমানে সাক্ষরতার হার শতকরা ৭৩ দশমিক ৯ ভাগে উন্নীত হয়েছে, যা ২০০৫ সালে তৎকালীন সরকারের সময় ছিল শতকরা ৫৩ দশমিক ৫ ভাগ। বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রায় এক কোটি ৮০ লাখ নিরক্ষরকে অক্ষর জ্ঞান প্রদান করা হয় উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সাক্ষরতা বিস্তারে এ বিশাল অর্জনের বাংলাদেশ ১৯৯৮ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা পুরস্কার ১৯৯৮’ লাভ করে।