ভারতে যাবার প্রস্তুতিকালে কানাইঘাট থেকে দালাল সহ ১৪ রোহিঙ্গা নাগরিক আটক

48
কানাইঘাট থানা পুলিশের হাতে আটক হওয়া নারী-পুরুষ ও শিশু সহ ১৪ রোহিঙ্গা নাগরিক।

কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
অবৈধ ভাবে ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতিকালে এক দালাল সহ ১৪ শরণার্থী রোহিঙ্গা কে কানাইঘাট থানা পুলিশ আটক করেছে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের নারী-পুরুষ ও শিশু সহ ১৪ রোহিঙ্গা নাগরিক কে কানাইঘাটের দীঘিরপার পূর্ব ইউপির হারিছ চৌধুরী বাড়ীর সুরমা নদীর খেয়াঘাট এলাকা থেকে পুলিশ তাদের আটক করে। আটককৃত রোহিঙ্গাদের পুলিশি হেফাজতে থানায় রাখা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আটককৃত রোহিঙ্গারা কক্সবাজার জেলার একটি রোহিঙ্গা স্মরনার্থী আশ্রয় ক্যাম্প থেকে কানাইঘাটের সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে দালালদের মাধ্যমে ভারতে যাবার উদ্দেশ্যে গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে বাসে করে প্রথমে কুমিল্লায় আসে। পরে তারা ট্রেনে করে মঙ্গলবার রাতে সিলেট কদমতলী বাসটারমিনাল এলাকায় নেমে সেখানে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে কিশোরগঞ্জ জেলার বাজিতপুর থানার উত্তর সরারচর গ্রামের মহরম আলীর পুত্র মোঃ নুরুল্লাহ (২৪) এ রোহিঙ্গাদের রিসিভ করে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে তাদের কানাইঘাটে রাত আড়াইটার দিকে নিয়ে আসে। সড়কের বাজার এলাকায় টহলরত থানা পুলিশের এসআই আবু কাউছার হারিছ চৌধুরীর বাড়ীর পাশে গভীর রাতে একটি মাইক্রোবাস ভর্তি লোকজনদের কে দেখে তাদের কথাবার্তা সন্দেহ হলে আটক করে রাখেন। পরে তিনি থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম কে ঘটনাটি অবহিত করলে ওসি’র তত্বাবধানে আটককৃতদের পরিচয় শনাক্ত করে ১৪ জন রোহিঙ্গা অবৈধ ভাবে ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতির ঘটনায় তাদের সাথে থাকা দালাল নুরুল্লাহ ও মাইক্রোবাস চালক কানাইঘাটের আব্দুল মালিক কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। থানায় কয়েকজন রোহিঙ্গাদের সাথে কথা হলে তারা বলেন প্রায় ৭ মাস পূর্বে মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়ে টেকনাফ সীমান্ত এলাকা দিয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে কক্সবাজারের একটি স্মরনার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। তাদের অনেক আত্মীয়-স্বজন ভারতের রোহিঙ্গা একটি আশ্রয় কেন্দ্র থাকায় তারা কানাইঘাটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে সেখানে যাবার চেষ্টা করছিল। একজন দালাল সেখান থেকে তাদের ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য কন্ট্রাক্ট করছিল কিন্তু তার পরিচয় তারা বলতে পারেনি। আটক কিশোরগঞ্জের নুরুল্লাহ ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি মাদ্রাসার ছাত্র ছিল বলে জানায়। রোহিঙ্গাদের সাথে সে ও ভারতে যাবার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তাদের কারা কানাইঘাটে নিয়ে আসছে সেই দালারের নামও বলতে পারেনি। থানার এসআই আবু কাউছার জানান প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে ১৪ রোহিঙ্গাকে নুরুল্লাহ কানাইঘাটে নিয়ে এসেছে অবৈধ ভাবে ভারতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এ ঘটনার পিছনে আরো কোন দালাল জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে। আটককৃত রোহিঙ্গাদের আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরায় চট্টগ্রামের যে কোন রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে পাঠানো হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। আটককৃত রোহিঙ্গারা হলো ফরিদ মিয়া (৫০), ছালেহা বেগম (৩৫), মীর জাহেদ (১২), মুজিবুল হক (০৮), জাবুল হক (০৪), আজিজুল হক (০৩), মোঃ ওয়ারেজ (২৮), দেনোয়াজ বেগম (২৬), তছলিমা (০৪), মস্তকিমা (০৩), মমতাজ বেগম (১৮), মোঃ শফিক (২৭), সৈয়দ আলম (৩০), কামাল হোসেন (৩০)। তাদের প্রত্যেকের বাড়ী হচ্ছে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে। এছাড়া তাদের সাথে আটক করা হয়েছে দালাল কিশোরগঞ্জের মোঃ নুরুল্লাহ (২৪), মাইক্রোবাস চালক কানাইঘাটের নারাইনপুর গ্রামের তজল্লুর রহমানের পুত্র আব্দুল মালিক (২৩) কে।