কাজিরবাজার ডেস্ক :
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সারাদেশে মেয়াদোত্তীর্ণ চার লাখ ৭৯ হাজার ৪৯৮ যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট হালনাগাদ করার সময় বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। এই মর্মে সম্প্রতি গণমাধ্যমে সরকারের এই যানবাহন নিয়ন্ত্রণ সংস্থার পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মাসের ৪ আগষ্ট পর্যন্ত সারাদেশে বিআরটিএ নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৪১ লাখ ছয় হাজার ৯৩৪। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল। এই যানের সংখ্যা ২৬ লাখ ৯৬ হাজার ৪৭২। অর্থাৎ নিবন্ধিত মোট যানবাহনের অর্ধেকের বেশি এখন মোটরসাইল। ফলে দুই চাকার এই বাহনে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি ৩০ ভাগের বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে মোট সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় ৩৩ ভাগই ঘটছে মোটরসাইকেলের কারণে। যে কেউ ইচ্ছা করলেই এই যানটির চালক সাজতে পারছেন।
এছাড়া সারাদেশে নিবন্ধিত অটোরিক্সার সংখ্যা দুই লাখ ৮৭ হাজার ৫১৩। প্রাইভেটকারের সংখ্যা তিন লাখ ৫৮ হাজার ৬১৫ ও ট্রাকের সংখ্যা এক লাখ পাঁচ হাজার ১১৭। পাশাপাশি রয়েছে অন্যান্য আরও কিছু যান্ত্রিক পরিবহন।
এদিকে রাজধানীতে একই সময় পর্যন্ত নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ১৪ লাখ সাত হাজার ৭৭টি। এসব যানবাহনের মধ্যে প্রায় অর্ধেক হলো মোটরসাইকেল। এই সংখ্যা এখন ছয় লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৩। ইতোমধ্যে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ ১২ এ্যাপভিত্তিক প্রতিষ্ঠানকে আনুষ্ঠানিক নিবন্ধন দিয়েছে। রাজধানীতে চলাচলকারী এসব মোটরসাইকেলের বেশিরভাগই এ্যাপভিত্তিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ভাড়ায় চালিত। এর বাইরে ঢাকায় প্রাইভেটকারের সংখ্যা দুই লাখ ৮৬ হাজার ১৬, মিনিবাসের সংখ্যা ১০ হাজার ৬৬১, বাসের সংখ্যা ৩১ হাজার ৯৭১।
সারাদেশে ফিটনেসবিহীন চার লাখ ৭৯ হাজার ৩২০ যানবাহন চলাচল করছে বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। গত ২৩ জুলাই এই সংখ্যা উল্লেখ করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই যানবাহনগুলোর নিবন্ধন থাকলেও সেগুলোর মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
হাইকোর্টের দেয়া আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিএ’র আইনজীবী এ্যাডভোকেট রাফিউল ইসলাম এ প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। প্রতিবেদন অনুসারে, ফিটনেসবিহীন যানবাহনগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিভাগে দুই লাখ ৬১ হাজার ১১৩, চট্টগ্রাম বিভাগে এক লাখ ১৯ হাজার ৫৮৮, রাজশাহী বিভাগে ২৬ হাজার ২৪০, রংপুর বিভাগে ছয় হাজার ৫৮৮টি, খুলনা বিভাগে ১৫ হাজার ৬৬৮, সিলেট বিভাগে ৪৪ হাজার ৮০৫ এবং বরিশাল বিভাগে পাঁচ হাজার ৩৩৮।
সম্প্রতি সড়ক দুর্ঘটনা ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন সংক্রান্ত রিপোর্ট বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এর প্রেক্ষিতে আদালত অবৈধ যানবাহনের সংখ্যা জানতে চায়। এরপর আনুষ্ঠানিক জবাব দেয় বিআরটিএ। বিআরটিএ কর্মকর্তারা বলছেন, মোটরযানের মালিকদের অবগতির ইতোমধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বিআরটিএ কম্পিউটার সিষ্টেম (বিআরটিএ-আইএস) হতে পরিলক্ষিত হয়ে যে, সারাদেশে চার লাখ ৭৯ হাজার ৪৯৮ সংখ্যক বিভিন্ন ধরনের মোটরযানের ফিটনেস সার্টিফিকেটের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণ মোটরযানের ফিটনেস হালনাগাদ করার জন্য আগামী সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে।
বিআরটিএ (সড়ক নিরাপত্তা বিভাগের) পরিচালক মাহবুব-ই-রব্বানী বলেন, পরিবহন মালিকরা অনেক সময় ফিটনেসের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি খেয়াল করেন না। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় গাড়ি একেবারেই নষ্ট, অকেজো। দিনের পর দিন তা গ্যারেজে পরে আছে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী গাড়ির অবস্থান যাই হোক মেয়াদ শেষে তা বিআরটিএ কাছে রিপোর্ট করতে হয়।