ষ্টাফ রিপোর্টার :
রোহিঙ্গারা ফিরে না যাওয়ার জন্য মিয়ানমারকেই দায়ি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেছেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের আস্থা তৈরি করতে পারেনি। যে কারণে রোহিঙ্গারা ফিরতে রাজি হচ্ছে না। তবে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। রোহিঙ্গাদেরকে ফিরিয়ে নিতে হবে। রোহিঙ্গাদেরকে আমরা বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াতেও পারবো না। তাদেরকে ফিরে যেতে হবে।
গতকাল শুক্রবার সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেছেন মন্ত্রী। ঢাকা থেকে বিমানযোগে বিকেল ৬টার দিকে সিলেটে আসেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যেসব দাবি জানাচ্ছে সেটা মানতে আমরা বাধ্য নই। এটা তারা তাদের দেশে গিয়ে অর্জন করতে হবে। মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করা সম্ভব হওয়ায় তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে রাজি হয়েছে। আগে যেসব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের পক্ষে কথা বলেছিল এখন তারাও প্রত্যাবর্তনের পক্ষে কথা বলছেন। প্রয়োজনে আরও চাপ সৃষ্টি করা হবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন কাজ শুরু না হওয়া প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন আরও বলেন, মিয়ানমারের সাথে আমাদের আরও আলোচনার সুযোগ আছে। আমরা তাদেরকে আগেই প্রস্তাব দিয়েছিলাম রোহিঙ্গাদের ১০০ জন নেতাকে সেখানে নিয়ে যেতে। তাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য সেখানে কি কি করা হয়েছে সেগুলো দেখে এসে তারা অন্যদের বোঝাবে। রোহিঙ্গাদের জন্য সেদেশে চায়না এক হাজার ও ভারত আড়াই শত বাড়ি বানিয়ে দিয়েছে। সেগুলো দেখে এসে তারা যখন অন্য রোহিঙ্গাদের বলতো তখন তারা আশ^স্ত হতো। প্রত্যাবর্তনে রাজি হতো। কিন্তু মিয়ানমার সেটা করেনি। তাই প্রত্যাবর্তনের ব্যর্থতার দায় তাদেরই। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রত্যাবর্তনের জন্য যা যা করা দরকার সরকার সব করবে।
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে দিতে কূটনৈতিকভাবে সরকার ব্যর্থ হয়েছে বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদেরকে ফেরাতে পারিনি এটা সত্য। তবে তাদেরকে যেতে হবে। কবে যাবে সেটা হয়তো এখন বলা যাচ্ছে না। বিএনপির কাছে অন্য কোন ভালো আইডিয়া থাকলে আমরা তাদেরকে ওয়েলকাম জানাবো।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ড. এ কে আব্দুল মোমেন সদর উপজেলার খাদিমনগর বাইশটিলায় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ করেছেন। সিলেটে দুদিনের সফরে এসেই এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার ৭টায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সদ্য প্রয়াত সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আ.ন.ম শফিকের বাসায় যান। তিনি শাহজালাল উপশহরস্থ বাসায় গিয়ে মরহুমের পরিবারের সদস্যদের খোঁজখবর নেন এবং আ ন ম শফিকের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আলোচনা করেন।
পৃথক পৃথকভাবে মন্ত্রীর সাথে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য, সিলেট মহানগরের সভাপতি সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিক চৌধুরী, সহ সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, চেয়ার্যমান আশফাক আহমদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, এডভোকেট নিজাম উদ্দিন, বিজিত চৌধুরী, সুজাত আলী রফিক, নাসির উদ্দিন খান, এড. রঞ্জিত সরকার, ডা. আরমান আহমদ শিপলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আফজর আজিজ, জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আহমদ, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার প্রমুখ।