কাজিরবাজার ডেস্ক :
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির সীমান্ত এলাকার ঘুমধুম পয়েন্টে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সেতু ও সন্নিহিত ট্রানজিট ক্যাম্প প্রস্তুত। পূর্ব তথ্যানুযায়ী আজ ২২ আগষ্ট থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কাজ শুরুর জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমার প্রস্তুত। বাংলাদেশ সরকার ও প্রশাসনের সকল স্তরেও চূড়ান্ত প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনও ঢাকায় গণমাধ্যম কর্মীদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পাশাপাশি শরণার্থী ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের পক্ষেও কয়েক দফায় বৈঠক করে কমিশনার আবুল কালাম বুধবার সন্ধ্যায় জানিয়েছেন, আজ সকাল থেকে ঘুমধুম পয়েন্ট দিয়ে প্রত্যাবাসন কাজ শুরুর জন্য তারা সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। বুধবার রাতের মধ্যেই আরও কিছু কাজ সম্পন্ন করার প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।
কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, রোহিঙ্গারা আগেরকার মতো আবারও বেঁকে বসেছে। প্রত্যাবাসনে লিষ্টেড রোহিঙ্গা সদস্যরা তাদের মতামতে এই মুহূর্তে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ইতোমধ্যে প্রত্যাবাসন ইস্যুতে ‘ভয়েস অব রোহিঙ্গা’ নামের সংগঠনের ব্যানারে যে পাঁচ দফা দাবি রোহিঙ্গাদের পক্ষে উত্থাপন করা হয়েছে সে দাবি বাস্তবায়নে অনড় মনোভাবও প্রদর্শন করা হচ্ছে। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে উঠে আসছে আজ বৃহস্পতিবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু ইস্যুটি এখনও জটিলতার আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। প্রত্যাবাসন শুরুর কাজে নিয়োজিত সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এক কথায় হ্যাঁ বা না এমন কোন বক্তব্য গণমাধ্যম কর্মীদেরও বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত দেয়া হয়নি। তবে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারপক্ষ চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন শক্তির ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে এখন রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে।
ইউএনএইচসিআর-এর কর্মীরা বুধবার পর্যন্ত দু’দিন টেকনাফের শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরের ২৬ ও ২৭ নম্বর ক্যাম্পের প্রত্যাবাসনে লিষ্টেড রোহিঙ্গাদের সাক্ষাতকার গ্রহণ করেছেন। এ সময় তাদের সহযোগিতা করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সদস্যগণ। ইউএনএইচসিআরের পক্ষে গত মঙ্গলবার প্রত্যাবাসন প্রশ্নে ২১ পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাতকার নেয়া হয়। বুধবার দ্বিতীয় দিনে ২৬ সিআইসি ক্যাম্পে শতাধিক রোিহঙ্গা পরিবারের মতামত গ্রহণ করা হয়। মতামত প্রদানকারীরা মঙ্গলবার যেমন তাদের পাঁচটি শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাখাইন রাজ্যে ফিরে যাবে না বলে মতামত ব্যক্ত করেছে, ঠিক অনুরূপভাবে বুধবারও শতাধিক পরিবারের পক্ষ থেকে একই বার্তা দিয়েছে ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তা ও কর্মীদের। উল্লেখ্য, মিয়ানমারপক্ষ ইতোমধ্যে যে ৩ হাজার ৪৫০ রোিহঙ্গাকে ফিরিয়ে নেয়ার সম্মতি জানিয়ে লিষ্ট পাঠিয়েছে ইউএনএইচসিআরের পক্ষে এই লিষ্টেড সদস্যদেরই মতামত নেয়া হয়েছে। কিন্তু এরা সকলেই তাদের ৫ দফা দাবি পূরণ না হলে ফিরে যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রের কয়েকটি ঘরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি দল।